গ্রাফিক— সনৎ সিংহ।
রেশন দুর্নীতির অভিযোগে রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। অথচ তার মাস দুয়েক আগে কেন্দ্রীয় সরকারই বাংলার রেশন ব্যবস্থার ঢালাও প্রশংসা করেছিল। চিঠি দিয়ে কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রক জানিয়েছিল, বণ্টন ব্যবস্থাকে স্বয়ংক্রিয় করার যে চেষ্টা তারা করছে, সেই চেষ্টা সফল ভাবে কার্যকর করতে পেরেছে পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্যের প্রশংসা করে কেন্দ্রের এই বক্তব্যই এখন বাংলার শাসকের হাতিয়ার।
রেশন দুর্নীতি নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে রাজ্য-রাজনীতিতে তুলকালাম চলছে। বিরোধী তথা কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির বঙ্গনেতারা একের পর এক তোপ দাগছে তৃণমূলকে লক্ষ্য করে। ঠিক এই সময়েই রাজ্যের রেশন ব্যবস্থার প্রশংসা করে কেন্দ্রের ওই চিঠির কথা প্রকাশ করল বাংলার শাসকদল। এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) তারা লিখল, কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে শুধু বাংলার রেশন বণ্টন ব্যবস্থার প্রশংসাই করেননি। এক ধাপ এগিয়ে একটি চিঠি লিখে বাংলাকে এ ব্যাপারে দরাজ শংসাপত্রও দিয়েছে। তাতে দু’টি বিষয় বিশেষ করে বলা হয়েছে। এক, রেশনের বণ্টনের প্রক্রিয়াকে আরও মসৃণ করা। দুই, রেশন বণ্টন সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য প্রতি মাসে নিয়ম করে কেন্দ্রকে জানানো। দু’টি ক্ষেত্রেই বাংলার রেশন সংক্রান্ত পোর্টাল ‘অন্নবিতরণ’ দারুণ কাজ করেছে।
এ ব্যাপারে বঙ্গ বিজেপির নেতাদের সরাসরি আক্রমণ করে তৃণমূল লিখেছে, যারা বাংলার রেশন ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, তাদের আবার ভুল প্রমাণ করা গেল।
তৃণমূলের পোস্ট। ছবি: এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেল।
অগস্টেই রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী পীযূষের সঙ্গে বৈঠক করতে দিল্লি গিয়েছিলেন। সেই বৈঠকের পরই ওই চিঠি দিয়েছিল কেন্দ্র। গত ৩১ অগস্ট রাজ্যের খাদ্য দফতরকে ওই চিঠি দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রকের তরফে। তার দু’মাসের মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার রাত ২টো ৪০ মিনিটে (ক্যালেন্ডার মতে ২৭ অক্টোবর, শুক্রবার) গ্রেফতার করা হয় রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়কে।
এ ক্ষেত্রে উল্লেখ্য, যে রেশন ব্যবস্থাকে ডিজিটাইজ়ড করার প্রশংসা কেন্দ্র করেছে, সেই প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছিল জ্যোতিপ্রিয় খাদ্যমন্ত্রী থাকাকালীনই। তবে সেই প্রক্রিয়া পুরোপুরি কার্যকর হয় ২০২৩ সালের ১ মে থেকে। তত দিনে অবশ্য খাদ্যমন্ত্রী বদলেছে। ২০২১ সালে খাদ্য দফতরের দায়িত্ব পান রথীন। জ্যোতিপ্রিয়ের হাতে আসে অন্য দফতর। তার পর কেটে গিয়েছে আড়াই বছর। সম্প্রতি রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক জানিয়েছেন, গত আড়াই বছরে রেশনে কোনও দুর্নীতি হয়নি।