—প্রতীকী চিত্র।
গাড়ির ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষণ কোনও নতুন ঘটনা নয়। সেই দূষণ রুখতে এ বার নতুন সফ্টঅয়্যার আনতে চলেছে কেন্দ্র। রাজ্য পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা বেসিল নতুন একটি সফ্টঅয়্যার তৈরি করেছে। পরীক্ষামূলক ভাবে তারা নতুন সফ্টঅয়্যারের ব্যবহার শুরু করে দিয়েছে। গোটা দেশের দূষণ মাপার যন্ত্রে নতুন এই সফ্টঅয়্যার লাগানো বাধ্যতামূলক করা হবে বলে জেনেছে পরিবহণ দফতর। বহু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, গাড়ির ধোঁয়া পরীক্ষায় পাশ করলেও, পুলিশ প্রশাসনের তরফে যখন গাড়ির ধোঁয়া পরীক্ষা করা হচ্ছে, তাতে ত্রুটি ধরা পড়ছে। এমন অভিযোগ বিভিন্ন রাজ্য সরকার মারফত কেন্দ্রীয় পূর্ত ও সড়ক মন্ত্রকে জানানো হয়েছিল। তার পর থেকেই এই বিষয়ে কাজ শুরু করে কেন্দ্রীয় সরকার। সম্প্রতি তারা নতুন সফ্টঅয়্যার তৈরিতে সাফল্য পেয়েছে। আগামী দিনে গাড়ির দূষণ পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে এই সফ্টঅয়্যারটি লাগানো হবে। নতুন এই প্রযুক্তি চালু করার ক্ষেত্রে রাজ্যগুলিকেও পাশে পেয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্র এই নতুন সফ্টঅয়্যারটি রাজ্য সরকার গুলিকে দেওয়া শুরু করলেই তার ব্যবহার শুরু হবে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “সাধারণত পেট্রল পাম্প গুলিতেই ধোঁয়া পরীক্ষাকেন্দ্র থাকে। সেখানে গিয়ে গাড়ি চালকেরা অল্প টাকা ঘুষ দিয়ে সহজেই দূষণ নিয়ন্ত্রণের ছাড়পত্র পেয়ে যান। কিন্তু পরে দেখা যায় সেই গাড়িগুলি আদৌ দূষণ পরীক্ষায় পাশের যোগ্য নয়। তাই বিকল্প বন্দোবস্ত হিসাবে নতুন এই সফ্টঅয়্যার তৈরি করা হয়েছে। যাতে গাড়ির সার্টিফিকেট পেতে যে কারচুপি চলছে, তা সহজেই বন্ধ করা যায়। এবং কোন পেট্রল পাম্পে দূষন পরীক্ষার ক্ষেত্রে ত্রুটি রয়েছে তা-ও সহজেই ধরা যায়।” তবে পরিবহণ দফতরের এমন অভিযোগ মানতে চায় না অনলাইন ক্যাব অপারেটরস গিল্ড। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যে কোনও পেশার ক্ষেত্রেই ১০০ জনের মধ্যে ২-৩ জন অসাধু হতেই পারে। তাই বলে আমরা যারা গাড়ির মালিক তারা কখনওই পরিবেশ দূষণের বিষয়টিকে প্রশ্রয় দিতে পারি না। আসলে গাড়ির ধোঁয়া পরীক্ষার ক্ষেত্রে যে পদ্ধতিটি বর্তমানে চালু রয়েছে, তা সরকারের অনুমোদন করা। সে ক্ষেত্রে ত্রুটি চোখে পড়াতেই নতুন সফ্টঅয়্যার চালু করা হচ্ছে। নতুন প্রযুক্তি চালু হলে আমাদের কোনও অসুবিধা নেই।” উল্লেখ্য, কোনও গাড়ি দূষণ পরীক্ষায় পাশ না করলে তাকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হয়।
এ ক্ষেত্রে অবশ্য ভিন্ন মত পোষণ করেছেন সিটি সাবারবান বাস সার্ভিসের নেতা টিটু সাহা। তাঁর কথায়, “করোনা সংক্রমণের পর বেসরকারি পরিবহণ ব্যবস্থা ধুকছে। আমরা চাই প্রযুক্তিগত বিষয়গুলিতে যেমন নজর দেওয়া হচ্ছে, তেমনই এই রুগ্ন হয়ে যাওয়া পরিবহণ শিল্পের দিকে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার নজর দিক। পরিবেশ দূষণ কেউই চায় না। আমরা বেসরকারি বাস মালিকেরা তো চাইই না। তবে এ ক্ষেত্রে দেখতে হবে নতুন প্রযুক্তি চালু করার ক্ষেত্রে বেসরকারি বাস মালিকদের উপর যাতে কোনও রকম প্রশাসনিক চাপ না তৈরি হয়।” নতুন প্রযুক্তি চালু হলে দেশের বাতাসে দূষণের পরিমাণ অনেকটাই কমবে বলে দাবি করছেন পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা।