প্রতীকী ছবি।
একদিকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরে রাজ্যের কৃষিপণ্যের রফতানি গত তিন বছরে কমেছে ২৬০০ কোটি টাকার বেশি। অন্য দিকে, কোভিড-অতিমারির কারণে সেই যাচাই পদ্ধতি এখন আরও কঠোর ভাবে মানছে সংক্রমণ-সচেতন বিশ্ব। এই পরিস্থিতিতে রফতানি নীতির পরিমার্জন চেয়ে কেন্দ্রের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য। কৃষি-কর্তাদের বক্তব্য, কৃষকদের নথিভুক্তকরণ পদ্ধতির সরলীকরণ, নতুন পণ্য রফতানির তালিকাভুক্ত করা এবং উচ্চ গুণমানের ফসল ফলাতে চাষিদের প্রশিক্ষণ দিতে না পারলে আগামী দিনে আরও ধাক্কা খাবে রাজ্যের রফতানি-সম্ভাবনা। রাজ্যের আর্জি কেন্দ্র মানতে পারে। এমন ইঙ্গিত মিলেছে বলেও সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি।
বিদেশে প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণে কৃষিপণ্য রফতানি হয়ে থাকে। তবে সংশ্লিষ্ট দেশগুলির মানদণ্ডের সঙ্গে রফতানি হওয়া কৃষিপণ্যের গুণমানের মিল না থাকলে বরাত বাতিল হয়। স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষতির মুখে পড়েন চাষিরা। সরকারি সূত্রের খবর, প্রধানত এই কারণে গত তিন বছরে এ রাজ্য থেকে ফসল রফতানি দফায় দফায় কমেছে। ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে যেখানে ৭৫৫৬ কোটি টাকার ফল-আনাজ রফতানি হয়েছিল, ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে তা কমে হয় ৬৭২৯ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে সেই পরিমাণ আরও কমে দাঁড়িয়েছে ৪৮৯৫ কোটি টাকায়। কোভিড কবলিত চলতি আর্থিক বছরে তা আরও ধাক্কা খাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেই কারণে, কেন্দ্রীয় সরকার এবং আপেডা (এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড প্রসেসড ফুড প্রডাক্টস এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি)-এর দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য।
এত দিন সাধারণত এক বিঘার বেশি জমি থাকা একক কৃষকরাই রফতানির জন্য তালিকাভুক্ত হতে পারতেন। সেই সূত্রে রাজ্যে নথিভুক্ত রফতানিকারকের সংখ্যা কমবেশি সাত হাজার। এখন ফার্মার প্রোডিউসার অর্গানাইজেশন (এফপিও), ফার্মার্স ইন্টারেস্ট গ্রুপ (এফআইজি) এবং ফার্মার প্রোডিউসার কোম্পানিগুলিকেও (এফপিসি) রফতানির তালিকাভুক্ত করতে চাইছে রাজ্য। তাদের যুক্তি, আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে সংগঠনগুলিই চাষিদের প্রশিক্ষণ দেবে। ফলে আরও বেশি সংখ্যক চাষি নিজেদের ফসল রফতানি করে বাড়তি আয় করতে পারবেন। এক কর্তার কথায়, “উপযুক্ত প্রশিক্ষণ না হলে একক কৃষকের পক্ষে রফতানিযোগ্য গুণমানে ফসলের চাষ করা কঠিন। ফসলের মান যাচাইয়ের জন্য ভাল পরীক্ষাগারেরও প্রয়োজন। তাই বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাগারটির মানোন্নয়নেরও পরিকল্পনা করা হয়েছে।”