নয়ানজুলির পাঁকে তখনও আটকে পুলকার। পোলবার কামদেবপুরে।— নিজস্ব চিত্র
দলবল নিয়ে অভিযানে বেরিয়েছিলেন রাজ্য আবগারি অফিসার। শুক্রবার সকালে হুগলির পোলবায় সুগন্ধা মোড় থেকে ‘সন্দেহজনক’ একটি মোটরবাইককে তাড়া করে ডানকুনির দিকে এক কিলোমিটার চলে যান। বাইকচালকের কাছ থেকে কিছু না পেয়ে আবার ফিরছিলেন সুগন্ধা মোড়ে। তখনই দেখেন, রাস্তার পাশে নোংরা জলের ডোবার পাশে দাঁড়িয়ে চিৎকার করছেন স্থানীয় কয়েক জন।
ফোনে ঘটনার কথা বলছিলেন আবগারি দফতরের ভদ্রেশ্বর শাখার ওসি মৃত্যুঞ্জয় দে। জানালেন, তাঁর সঙ্গে ছিলেন তিন কনস্টেবল তাপস মণ্ডল, অমিত মণ্ডল এবং গৌরহরি মাহারা। গাড়ি চালাচ্ছিলেন বাপ্পা দাস। মৃত্যুঞ্জয়বাবুর কথায়, ‘‘হাতে সময় নেই বুঝতে পেরে চার জনই ঝাঁপিয়ে পড়ি জলে। স্থানীয় বাসিন্দারা তো ছিলেনই।’’
মৃত্যুঞ্জয়বাবুর বর্ণনা অনুযায়ী, পুলকারটির মাথা নীচের দিকে আর চারটে চাকা ছিল উপরের দিকে। জলের গভীরতা ছিল প্রায় চার ফুট। তলায় গভীর পাঁক। তাঁর কথায়, ‘‘গাড়িটির কিছুটা অংশ উপর দিকে থাকায় বাচ্চাগুলো মাথা তুলে দম নিচ্ছিল। কিন্তু নরম পাঁকে গাড়িটা আস্তে আস্তে বসে যাচ্ছিল।’’ এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, প্রথমে চালকের দিকের দরজা খুলে দু’একজন বাচ্চাকে উদ্ধার করা হয়। তার পরে পিছনের দিকে গিয়ে বাঁশ দিয়ে কাচ ভেঙে, ভিতরের লক খোলা হয়।
মৃত্যুঞ্জয়বাবু বলেন, ‘‘গাড়ির ভিতরে এক বাচ্চার মা ছিলেন। কিন্তু ওই অবস্থায় তিনি দরজার লক খুলতে পারেননি। গাড়ির পিছন দিক থেকে প্রায় ১০-১২টা বাচ্চাকে উদ্ধার করা হয়। এই সময়ে কেউ বলে ওঠে, আরও দু’জন আছে। আবার জলে নেমে খোঁজা শুরু হয়।’’ প্রথম বাচ্চাটিকে অচৈতন্য অবস্থায় পাঁক থেকে তোলা হয়। দ্বিতীয় বাচ্চাটিকে পেতে আরও ১৫ মিনিট লাগে। দু’জনেরই মুখে মুখ লাগিয়ে, বুকে পাম্প করে, শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হয়।