—প্রতীকী চিত্র।
ছোট পরিসরে হাতে হাতে সমাধান— এই ভাবনা থেকেই পাড়ায় পাড়ায় সরকারি পরিষেবা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম দিয়েছিলেন ‘পাড়ায় সমাধান’। সম্প্রতি সেই ‘পাড়ায় সমাধান’ কর্মসূচি নিয়ে সরকারকে কটাক্ষ করল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি জানতে চাইলেন, পাড়ায় টেবিল পেতে আর কী কী সমস্যার সমাধান করবে সরকার? এ বার কি ডিভোর্সের মামলারও সমাধান হবে পাড়ায়!
বুধবার রাজ্য সরকারের ‘পাড়ায় সমাধান’ কর্মসূচি নিয়ে একটি মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে। মামলাকারীর অভিযোগ ছিল, পাড়ায় সমাধান কর্মসূচিতে ৮৭ জন শিক্ষককে বদলি করেছে রাজ্য সরকার। শুধু তা-ই নয়, সেই বদলি হয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে এড়িয়ে গিয়ে। মামলাকারীর এই অভিযোগ শোনার পরই বিস্মিত বিচারপতি বলেন, ‘‘পাড়ায় সমাধানে ৮৭ জন শিক্ষক বদলি করা হল কী করে?’’ এ ব্যাপারে শিক্ষা দফতরের কাছে হলফনামা চেয়ে পাঠিয়ে বিচারপতি বলেন, ‘‘হাই কোর্টে শত শত বদলি সংক্রান্ত মামলার বিচারেরও তো তা হলে আর কোনও দরকার নেই। পাড়ায় টেবিল পেতেই হোক তা হলে সব।’’
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে জেতার পর পাড়ায় সমাধান কর্মসূচি চালু করে রাজ্য সরকার। তার আগে থেকেই দুয়ারে সরকার কর্মসূচি চালু ছিল রাজ্যে। কিন্তু সেটি হত ব্লক স্তরে। লক্ষ লক্ষ আবেদনের সমাধান হতে দেরি হত। জনগণের সমস্যার সমাধানকে ত্বরান্বিত করতেই ‘পাড়ায় সমাধান’ কর্মসূচির কথা ভাবা হয়। সেখানেই ৮৭ জন শিক্ষকেরও বদলি নিয়ে সমস্যার সমাধান করা হয়েছে বলে আদালতকে জানান মামলাকারী। বুধবারের শুনানির পর তাঁর নির্দেশ, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় শিক্ষা দফতরের কমিশনারকে এর ব্যাখ্যা দিয়ে হলফনামা দিতে হবে।
বুধবার শিক্ষা দফতরকে এই নির্দেশ দেওয়ার পরেই সরকারকে কটাক্ষ করে বিচারপতি বসু মন্তব্য করেন, ‘‘পাড়ায় টেবিল পেতে যখন সব হচ্ছে, তখন বিবাহ বিচ্ছেদের সমাধানও কি হবে? ডিভোর্স মামলার ডিক্রি সেটেলমেন্ট করার অধিকার দিয়ে দেওয়া হয়েছে পাড়ায় সমাধানে?’’