কলকাতা হাই কোর্ট ফাইল চিত্র
নিজেদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ রাজ্য। বেআইনি নির্মাণ নিয়ে রাজ্যের কড়া সমালোচনা করে বলল কলকাতা হাই কোর্ট। শুক্রবার একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে উচ্চ আদালত জানায়, এর আগে জমি মাফিয়াদের রুখতে রাজ্যকে সতর্ক করেছিল আদালত। কিন্তু তাতেও হুঁশ ফেরেনি। তারা হয় আইন জানে না, বা জেনেও ইচ্ছা করে এই ধরনের ঘটনা চলতে দিচ্ছে।
বিধাননগর পৌর নিগমের ৩৫ এবং ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেন ওই এলাকারই দুই বাসিন্দা। তাঁদের দাবি, নগর উন্নয়ন দফতর এবং রাজ্য সরকারের জমিতে আইন না মেনে রমরমিয়ে চলছে একের পর এক বহুতল নির্মাণ। অনেক ক্ষেত্রে রাস্তার উপরও উঠে যাচ্ছে সেই নির্মাণ কাজ। এর ফলে রাস্তা ছোট ও সংকীর্ণ হচ্ছে। অ্যাম্বুল্যান্স ও দমকলের গাড়ি ঢুকতে পারছে না অনেক জায়গায়। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি বলে দাবি মামলাকারীদের। শুক্রবার এই মামলাটির শুনানি হয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে। প্রধান বিচারপতি বিন্দল রাজ্যকে কার্যত ভর্ৎসনা করে বলেন, ‘‘রাজ্য নিজেদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ! বোঝাই যাচ্ছে রাজ্য কাজ করতে ইচ্ছুক নয়। এ নিয়ে রাজ্য কী পদক্ষেপ করেছে?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আদালত পেপার ওয়ার্কে বিশ্বাসী নয়। কাজ করে দেখান। এ সব দেখে বোঝা যায় আপনারা সমস্যা মিটিয়ে ফেলতে আগ্রহী নন। শুধু কোভিডের অজুহাত দিলে চলবে না।’’
সম্প্রতি ভুয়ো প্রতিষেধক-কাণ্ডে কলকাতায় গ্রেফতার হয়েছেন দেবাঞ্জন দেব। তিনি কলকাতা পুরসভার যুগ্ম কমিশনার সেজে প্রতারণার চক্র চালাতেন। তা নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য না করলেও, খোঁচা দিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘জানি না এখানকার যুগ্ম কমিশনার আসল না ভুয়ো!’’ মামলাকারীদের পক্ষের আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ওই এলাকায় জমি মাফিয়ারা ঢুকে বেআইনি ভাবে বহুতল নির্মাণ করছে। এর আগে ১৯ মার্চ উচ্চ আদালত রাজ্যকে সতর্ক করেছিল। তা কোনও কাজ হয়নি। এ বার এই দুর্নীতি নিয়ে ফের তোপের মুখে পড়ল রাজ্য।’’ আগামী ৯ অগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।