কলকাতা হাই কোর্ট। —নিজস্ব চিত্র।
পেনশন আটকে রেখে হেনস্থার দিন এ বার শেষ হওয়া দরকার। কেন প্রাপ্য টাকা যথা সময়ে পাওয়ার অধিকার থাকবে না? মঙ্গলবার এক শিক্ষকের পেনশন বকেয়া সংক্রান্ত মামলায় এমনই মন্তব্য করলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কড়া ভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘‘প্রাথমিক বা উচ্চ শিক্ষা যাই হোক না কেন, শিক্ষকদের পেনশন আটকে রেখে তাঁদেরকে হেনস্থার ঘটনা এ বার শেষ হওয়া দরকার।’’ শুধু তাই-ই নয়, এই ঘটনায় প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের যে সব আধিকারিক জড়িত তাঁদেরও বেতন বন্ধের নির্দেশ দেন বিচারপতি।
২০০৮ সালে দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন থেকে উত্তর ২৪ পরগনায় বদলি হন ধ্রুবজ্যোতি সরকার নামে এক শিক্ষক। ২০২০ সালে তিনি অবসর নেন। ওই শিক্ষককের অভিযোগ, অবসরের পর থেকেই তিনি পেনশন পাচ্ছেন না। তাঁর আইনজীবীর বক্তব্য, এর জন্য দায়ী দক্ষিণ দিনাজপুরের প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। তাদেরকে বার বার বলা স্বত্ত্বেও, বদলির ১৪ বছর পরও তারা নতুন স্কুলে সার্ভিস বুক-সহ কোনও তথ্য পাঠায়নি। মঙ্গলবার আদালতের সামনে পুরো ঘটনাটি তুলে ধরতেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। পাশাপাশি তাঁর নির্দেশ, এই সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত দক্ষিণ দিনাজপুরের প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান, জেলা পরিদর্শক ও স্কুল পরিদর্শকের বেতন বন্ধ থাকবে।
একই সঙ্গে ওই জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের কর্তাদের এই মামলায় ‘পক্ষ’ হিসাবে যুক্ত করার কথা জানান বিচারপতি। তাঁর নির্দেশ, প্রাথমিক বোর্ডের সাহায্য ছাড়াই নিজেদের অর্থে মামলা লড়বেন ওই আধিকারিকরা। অর্থাৎ এই মামলায় তাঁদের পক্ষের আইনজীবী নিয়োগের জন্য নিজেদেরকেই ‘গাঁটের কড়ি’ খরচ করতে হবে। সরকারি অর্থ ব্যবহার করতে পারবেন না তাঁরা। এ ছাড়া তাঁর প্রশ্ন, কেন মামলাকারী পেনশনের টাকা পাননি? আগামী শুনানির সময় সেই রিপোর্টও আদালতে জমা দিতে হবে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১৩ সেপ্টেম্বর ধার্য করা হয়েছে। বিচারপতি জানিয়েছেন, কোনও কারণে ১৩ সেপ্টেম্বর আদালত বন্ধ থাকলেও এই মামলার শুনানি হবে।