আদালতের নির্দেশ, আপাতত ইন্টারনেট বন্ধের সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হল।
মাধ্যমিক চলাকালীন ইন্টারনেট বন্ধের সিদ্ধান্তে ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। ওই বিষয়ে রাজ্যের জারি করা নির্দেশিকায় অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য ইন্টারনেট বন্ধ নিয়ে রাজ্য যে ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা সঠিক নয়। নির্দেশিকায় তারা মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র ফাঁসের কথা উল্লেখ করেনি। আদালতের নির্দেশ, আপাতত ইন্টারনেট বন্ধের সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হল। তবে রাজ্য চাইলে এ বিষয়ে পুনরায় ত্রুটিমুক্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারে। অর্থাৎ যে সব জায়গায় ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছিল, এখন আদালতের রায় অনুযায়ী বৃহস্পতিবার থেকেই তা ফের চালু হওয়ার কথা।
মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য বীরভূম, মুর্শিদাবাদ-সহ উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলার কিছু এলাকায় ১৬ মার্চ পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার কথা জানায় রাজ্য। ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় হাই কোর্টে। মামলাকারীর দাবি, বর্তমান সময়ের উপর দাঁড়িয়ে ইন্টারনেট একটি প্রয়োজনীয় বস্তু। ১৪৪ ধারা জারি করে তা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত সঠিক নয়। তাঁর আইনজীবী আদালতে জানান, জরুরি অবস্থা এবং জনসাধারণের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে কোনও এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। কিন্তু কোনও পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে এমন সিদ্ধান্ত সচরাচর দেখা যায় না! আর এর ফলে বৃহৎ অংশের মানুষ সমস্যায় পড়েছেন।
রাজ্যের কৌঁসুলি আদালতে জানান, আমরা গোয়েন্দা রিপোর্টের উপর নির্ভর করেছি। জানতে পেরেছি, ওই সব এলাকায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের আশঙ্কা রয়েছে। রাজ্যের এই দাবির পরেই মামলাকারীর আইনজীবী পাল্টা যুক্তি দেন, প্রশ্ন ফাঁসের আশঙ্কা থাকলে পরীক্ষার্থীদের ফোন নিয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে কড়া অবস্থান নিতে পারত রাজ্য। ইন্টারনেট বন্ধ কোনও যুক্তি সঙ্গত কারণ হতে পারে না। আদালতও রাজ্যের যুক্তির সঙ্গে একমত হয়নি। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য, গোয়েন্দা রিপোর্ট দেখিয়ে এ ভাবে ইন্টারনেট বন্ধ আদালতকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। যে ভাবে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে আদালতের চোখে তা-ও উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নয়। এর পরই আদালত জানায়, ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকতে পারে না। প্রশ্নপত্র ফাঁস আটকাতে অন্য যে কোনও পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারে রাজ্য।