রাজ্যের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেন অশ্লেষ বিরাদার। ফাইল চিত্র ।
মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য রাজ্যের কয়েকটি জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ নিয়ে রাজ্যের কাছে হলফনামা চাইল কলকাতা হাই কোর্ট। বুধবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, এ নিয়ে বৃহস্পতিবার একটি পর্যালোচনা বৈঠকে বসার কথা জানিয়েছে রাজ্য। তার প্রেক্ষিতেই বৃহস্পতিবার দুপুর ২টোর মধ্যে রাজ্যকে এ বিষয়ে হলফনামা দিতে হবে। জানাতে হবে কেন নির্দিষ্ট কয়েকটি জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।
মাধ্যমিক পরীক্ষা জন্য ৭ মার্চ থেকে ১৬ মার্চ পর্যন্ত রাজ্যের বীরভূম-সহ উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেন অশ্লেষ বিরাদার। বুধবার তাঁর আইনজীবী রঞ্জিতকুমার বছাইত সওয়াল করেন, কোনও বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই ইন্টারনেট বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। বলা হয়েছে, মাধ্যমিকের দিনগুলিতে বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত ইন্টারনেট বন্ধ থাকবে। কারণ হিসাবে প্রশ্নপত্র ফাঁসের আশঙ্কা করা হচ্ছে। অথচ ভয়েস কল এবং মেসেজের ক্ষেত্রে কোনও বিধিনিষেধ জারি করা হয়নি। শুধু ইন্টারনেট বন্ধ করা হলে অনেক জরুরি পরিষেবা ব্যাহত হবে।
তাঁর আরও বক্তব্য, "আমরা দেখেছি আইনশৃঙ্খলা অবনতি হলে বা সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙে পড়লে বা সম্ভাবনা থাকলে ইন্টারনেট বন্ধের মতো পরিস্থিতি তৈরি! এখানে পরিক্ষার্থীরা তো কেউ মোবাইল নিয়ে প্রবেশ করবে না। তা হলে কেন শুধু মালদহ, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুর, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, বীরভূম এবং দার্জিলিং জেলায় ইন্টারনেট বন্ধ করা হল।" বছাইতের যুক্তি, এখন সব কিছুতে ইন্টারনেট লাগে। একটা ট্যাক্সি বুক করতে গেলেও ইন্টারনেট লাগে। বলা ভাল, কেউ অস্বীকার করতে পারবে না এটা এখন জরুরি বস্তু। বর্তমান পরিস্থিতির উপর দাঁড়িয়ে ইন্টারনেট বন্ধ করা মানে মানুষের বাক স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ করা।
রাজ্যের যুক্তি, ইন্ডিয়ান টেলিগ্রাফ অ্যাক্ট অনুযায়ী জনসাধারণের প্রয়োজন এবং নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ইন্টারনেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। এই অবস্থায় স্বরাষ্ট্রসচিব এবং জেলাশাসক পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তা ছাড়া সারা জেলাজুড়ে বন্ধ করা হয়নি। ওই জেলাগুলির কয়েকটি ব্লকে সাময়িক সময়ের জন্য ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছে। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় আদালতকে জানান, ওই পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে। তার পরই পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।