জমজমাট দিঘার সৈকত। নিজস্ব চিত্র
বড়দিন এ বার শনিবার। সঙ্গে জুড়েছে রবিবারের ছুটি। তাই শুক্রবার থেকেই করোনার ওমিক্রন আতঙ্ক সরিয়ে পর্যটকদের ঢল নেমেছে সৈকত শহর দিঘায়। পূর্ব মেদিনীপুরে উপকূলের অন্য পর্যটন কেন্দ্র মন্দারমণি, তাজপুরেরও ছবিটা একই। ভিড় সামলাতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন।
বড়দিন উপলক্ষে প্রতি বছরই ভিড় জমে সৈকতের পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে। তবে করোনা কালে পরপর দু’বছর বেশ খানিকটা ভাটা পড়ে গিয়েছিল সেই আনন্দে। মাঝে আমপান, ইয়াসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগেও লন্ডভন্ড হয়েছিল সৈকত শহর। উৎসবের মরসুমে পর্যটকদের চেনা ভিড় কিছুটা হলেও কমেছিল এই ক’বছরে। কিন্তু এ বার পুজোর সময় থেকে পরিস্থিতি পাল্টাছে। পর্যটক টানতে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত দিঘার সৌন্দর্যায়নও করা হয়েছে।
পর্যটকেরাও আর হতাশ করেননি দিঘার হোটেল ব্যবসায়ীদের। শুক্রবারই দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে চলে এসেছেন দিঘায়। কেউ কেউ এসেছেন সপরিবার সপ্তাহান্তের ছুটি কাটাতে, তো কেউ এসেছে পিকনিক করতে। ভিড় দেখে বোঝার উপায় নেই যে, করোনার ওমিক্রন প্রজাতির ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
গত দু’দিনের তুলনায় এ দিন শীতের আমেজ খানিকটা কম ছিল। মিঠে রোদ পোহাতে পর্যটকেরা আড্ডা জমাচ্ছেন সৈকতের ধারে। আর সকাল থেকেই শিউলিরা খেজুর রসের হাঁড়ি নিয়ে হাজির তাঁদের কাছে। সব মিলিয়ে বড়দিনের আগাম আমেজ শুরু হয়ে গিয়েছে দিঘায়। দিঘা হোটেল মালিক সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘সপ্তাহ দুয়েক আগে থেকেই বড়দিনের ছুটিতে হোটেলের বুকিং শুরু হয়ে গিয়েছিল। অধিকাংশ হোটেল এবার অগ্রিম বুকিং পেয়েছে। সামান্য যা বাকি ছিল, তা-ও শুক্রবার ভরে যাচ্ছে।’’
আনন্দের আবহে অঘটন এড়াতে সজাগ প্রশাসন। ওল্ড দিঘা থেকে নিউ দিঘা পর্যন্ত স্নানঘাটগুলিকে দড়ি দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। নুলিয়া, পুলিশের পাশাপাশি সিভিল ডিফেন্স কর্মীদের মোতায়েন রাখা হয়েছে। বিভিন্ন ওয়াচ টাওয়ার থেকে পর্যটকদের সতর্ক করা হচ্ছে। চুরি, ছিনতাই এবং মহিলাদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সাদা পোশাকের পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ছাড়া, শুক্র এবং শনিবার সারা রাত ধরে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করেছে জেলা পুলিশ। কাঁথির এসডিপিও সোমনাথ সাহা বলেন, ‘‘পর্যটকেরা যাতে নির্বিঘ্নে বড়দিন উদ্যাপন করতে পারেন, সে জন্য প্রশাসন প্রস্তুত।’’
সৈকতের ধারে পিকনিক করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ। পর্ষদের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক মানসকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘নিউ দিঘাতে হেলিপ্যাড ময়দানে পর্যটকদের পিকনিক করার জন্য জায়গা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। প্লাস্টিকের পরিবর্তে শালপাতার থালা এবং বাটি ব্যবহারের জন্য সচেতন করা হচ্ছে।’’