গুয়াহাটি হাই কোর্ট। ফাইল চিত্র
‘ভোট পরবর্তী হিংসা’ মামলায় বৃহস্পতিবার সিবিআই-সহ জোড়া তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। ওই রায় সামনে আসার পরই গুয়াহাটি হাই কোর্টে বাংলার ঘরছাড়াদের ফেরত পাঠানোর আর্জি জানাল অসম সরকার। বৃহস্পতিবার অসম প্রশাসন আদালতে জানিয়েছে, অশান্তির কারণে পশ্চিমবঙ্গ থেকে পালিয়ে আসা মানুষদের ত্রাণ শিবিরে জায়গা দেওয়া হয়েছে। তাঁদের বসবাসের জন্য কোভিড বিধি মেনে যাবতীয় বন্দোবস্তও করা হয়েছে। প্রশাসনের তরফে প্রদান করা হয়েছে খাদ্য, ওষুধপত্রও। এ বার তাঁদের নিজের রাজ্যে ফেরার অনুমতি দিক আদালত। যদিও বৃহস্পতিবার গুয়াহাটি হাই কোর্ট এ নিয়ে কোনও নির্দেশ দেয়নি। এ বিষয়ে শুধু কেন্দ্রের কাছে মতামত জানতে চেয়েছে আদালত।
পশ্চিমবঙ্গে ভোটের পর বিভিন্ন জায়গায় অশান্তির অভিযোগ ওঠে। তা থেকে রেহাই পেতে পশ্চিমবঙ্গের কিছু মানুষ অসমে পালিয়ে যান বলে অভিযোগ। এ নিয়ে অভিজিৎ শর্মা নামে এক ব্যক্তি গুয়াহাটি হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। আদালত ঘরছাড়াদের আশ্রয় দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সেই মতো তাঁদের দায়িত্ব নেয় অসম প্রশাসন। কিন্তু প্রায় তিন মাস কেটে গেলেও তাঁরা এখনও ঘরে ফিরতে পারেননি। অসম সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সংখ্যাটা প্রায় ৭০। তবে তাঁদের মধ্যে কোনও শিশু নেই। আশ্রয়প্রার্থীরা সবাই কোচবিহারের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার ছিল ওই মামলার শুনানি। হলফনামায় কোকড়াঝাড় জেলার ডেপুটি কমিশনার আদালতকে জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলার ৭০ জনের আর অসমে থাকার প্রয়োজনীয়তা নেই। অনেকে নিজের ঘরে ফিরতেও ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তাই তাঁদেরকে ত্রাণ শিবির থেকে বাংলায় ফেরত পাঠানো হোক। তাঁরা ওই বাসিন্দাদের কোচবিহার জেলা প্রশাসনের হাতে তুলে দিতে চান। অসম সরকার ওই দাবি করলেও আদালত কোনও নির্দেশ দেয়নি। তারা বিষয়টি নিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রের মতামত জানতে চেয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানি ২৪ সেপ্টেম্বর ধার্য করেছে গুয়াহাটি হাই কোর্ট।
প্রসঙ্গত, ভোট পরবর্তী অশান্তি নিয়ে গুয়াহাটি হাই কোর্টের পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট ও কলকাতা হাই কোর্টেও মামলা দায়ের হয়। এর আগে কলকাতা হাই কোর্টে ওই মামলার শুনানির সময় হিংসার অভিযোগ স্বীকার করেনি রাজ্য সরকার। সেই সময় শুনানিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল জানিয়েছিলেন, তিনি জানতে পেরেছেন এ রাজ্য থেকে পালিয়ে কিছু মানুষ অসমের হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। তার পরই অশান্তির ঘটনার তথ্য অনুসন্ধান করতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে দায়িত্ব দেয় আদালত। আর সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই বৃহস্পতিবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল আদালত।