Suspected AQ Members

চার বছর ধরে তৈরি হচ্ছিল মুর্শিদাবাদের এই জেহাদি গ্যাং, দাবি গোয়েন্দাদের

বেসরকারি পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র নাজমুস সাকিবের সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন পোস্ট দেখে গোয়েন্দাদের দাবি, প্রায় ৪ বছর ধরে ধর্মীয় ভাবে সে কট্টরপন্থী হয়ে ওঠে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২০:২৯
Share:

দিল্লির পথে ধৃতরা। এনআইএ দফতর থেকে কলকাতা বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

অন্তত বছর চারেক আগে থেকেই শুরু হয়েছিল মগজধোলাই পর্ব। আল কায়দা যোগে পাকড়াও মুর্শিদাবাদের ৯ জনকে জেরা করে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের কার্যকলাপ খতিয়ে দেখে এমনটাই ধারণা জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র গোয়েন্দাদের।

Advertisement

ডোমকলের বেসরকারি পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র নাজমুস সাকিব। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার বিভিন্ন পোস্ট দেখে গোয়েন্দাদের দাবি, প্রায় চার বছর ধরে ধর্মীয় ভাবে সে ধীরে ধীরে কট্টরপন্থী হয়ে উঠেছে। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, ওই পোস্টগুলোর কোনওটাই আপত্তিকর বা বেআইনি নয়। কিন্তু ওই পোস্টগুলো থেকে স্পষ্ট যে, নাজমুস সেই সময় থেকেই মৌলবাদের প্রতি আকৃষ্ট। হাদিশ এবং সুরার বিভিন্ন লাইন ফেসবুকে পোস্ট করেছে নাজমুস। ধর্ম নিয়ে পড়াশোনা না করলে তার বয়সের এক জন তরুণের ওই ধরনের পোস্ট খানিকটা বেমানান বলেই দাবি গোয়েন্দাদের।

ঠিক একই রকম ভাবে পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক জলঙ্গির আল মামুন কামালেরও বছর তিনেক ধরে বেশ কিছু পরিবর্তন হয়েছে। গোয়েন্দাদের দাবি, ২০১৭ সালের আগে পর্যন্ত মামুন সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ধরনের পোস্ট করত গত তিন বছরে তা আমূল বদলে যায়। আর সেখান থেকেই গোয়েন্দাদের সন্দেহ, শুধু অনলাইন নয়, তার বাইরেও এই মডিউলের সঙ্গে যোগ রয়েছে জেহাদি সংগঠনের। এক তদন্তকারীর দাবি, ‘‘কাউকে জেহাদের পথে নিয়ে আসার অনেকগুলো পর্যায় থাকে। এদের জেরা করে মনে হচ্ছে, সরাসরি আল কায়দার কোনও জেহাদি অনলাইন গ্রুপে সদস্য হওয়ার অনেক আগে থেকেই এদের ধীরে ধীরে জেহাদের জন্য তৈরি করছিল অন্য কোনও গোষ্ঠী।”

Advertisement

লিউ আহমেদ (বাম দিকে) ও আল মামুন কামাল (ডান দিকে)। ৩ বছর আগের এই ছবি আসে এনআইএ-র হাতে।

তদন্তকারীদের দাবি, সেই জেহাদি গোষ্ঠী কোনও প্রকাশ্য সংগঠনের আড়ালে থেকে নাজমুস, লিউ আহমেদদের জেহাদের পথে আকৃষ্ট করে। তদন্তকারীদের সন্দেহ, মডিউলের গোড়ায় থাকা ওই সংগঠনের কার্যকলাপের সঙ্গে যথেষ্ট মিল রয়েছে খাগড়াগড়ের জেএমবি-র কার্যপদ্ধতির। জলঙ্গি এবং ডোমকলের ওই এলাকায় জেএমবি-র শীর্ষ নেতাদের নিয়মিত যাতায়াত ছিল। সংগঠনও ছিল ভাল। খাগড়াগড়ের তদন্তের সময় জেএমবি-র ওই স্লিপার সেলগুলো গা ঢাকা দেয়। সে রকম কোনও স্লিপার সেলের হাত ধরেই আল কায়দার নেটওয়ার্কে নাজমুস, লিউ-দের প্রবেশ বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

আরও পড়ুন: ‘ঐতিহাসিক ও প্রয়োজনীয়’, কৃষি বিলের পক্ষে ব্যাট ধরলেন মোদী

আরও পড়ুন: ‘কালো রবিবার’, কৃষি বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ডাক দিয়ে বললেন মমতা

গোয়েন্দাদের দাবি, ধৃতদের জেরা করে মালদহের বৈষ্ণবনগর এলাকার কয়েক জন যুবকের নাম পাওয়া গিয়েছে। যারা ওই মডিউলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত। তবে সেই যুবকরা এখন ফেরার। ধৃতদের জেরা করে গোয়েন্দাদের সন্দেহ, পড়শি রাজ্য অসমের কয়েক জন যুবকের সঙ্গেও ধৃতদের বিভিন্ন সময়ে কথাবার্তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। সেই সূত্র ধরে কেরল এবং অসমের আরও কয়েক জায়গায় এই মডিউলের সঙ্গে যোগ থাকা কয়েক জন সন্দেহভাজনের হদিশ পাওয়ার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা। সোমবার সন্ধ্যায় ধৃতদের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বিশেষ বিমানে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement