IPO

হু হু করে পড়ছে সেনসেক্স, শ্লথ বাজারে কোন জাদুকাঠিতে সফল গুচ্ছ আইপিও?

সেপ্টেম্বরের শেষ থেকেই দুর্বল হয়েছে সেনসেক্স, নিফ্‌টির মতো সূচক। কিন্তু এই সময় ঝাঁকে ঝাঁকে আসা নতুন শেয়ারের অনেকগুলি দারুণ সফল। বাজারে নথিবদ্ধ হওয়ার পরে মোটা লাভ করেছেন লগ্নিকারীরা।

Advertisement

অমিতাভ গুহ সরকার

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:৩৩
Share:

বাজারে নথিবদ্ধ হওয়ার পরে মোটা লাভ করেছেন লগ্নিকারীরা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

শেয়ার বাজারে যখন অবাধ পতন চলছে, তখন অন্য ছবি বিভিন্ন সংস্থার প্রথম বার শেয়ার বিক্রি করে তহবিল সংগ্রহের (আইপিও বা নতুন ইসু) বাজারে। সেপ্টেম্বরের শেষ থেকেই দুর্বল হয়েছে সেনসেক্স, নিফ্‌টির মতো সূচক। কিন্তু এই সময় ঝাঁকে ঝাঁকে আসা নতুন শেয়ারের অনেকগুলি দারুণ সফল। বাজারে নথিবদ্ধ হওয়ার পরে মোটা লাভ করেছেন লগ্নিকারীরা। বাজার দুর্বল হলেও নতুন শেয়ারের বিক্রিবাটায় ভাটা পড়েনি।

Advertisement

সম্প্রতি লগ্নিকারীদের ভাল লাভ দিয়ে বাজারে নথিবদ্ধ হয়েছে বেশ কয়েকটি সংস্থার শেয়ার। যেমন, ওয়ান মবিকুইকের শেয়ার ২৭৯ টাকায় ইসু হয়েছিল। লেনদেনের জন্য নথিবদ্ধ হয়েছে ৪৪০ টাকায়। এই সময় বাজার দর ইসুর দামের বেশি হলে লাভ। ভাল দামে নথিবদ্ধ হয়েছে বিশাল মেগামার্টও। ৭৮ টাকায় ইসু শেয়ার নথিভুক্তির দিন ওঠে ১০৪ টাকায়। এত অল্প সময়ে বিরাট রিটার্ন বাড়াচ্ছে উৎসাহ। আশা, নতুন বছরেও নতুন ইসুর বাজার চাঙ্গা থাকবে। তবে এই লগ্নিতে লোকসানের ঝুঁকিও থাকে। তবু ভিড় কমার নাম নেই।

আইপিও-র পাশাপাশি শেয়ার ছাড়া হয়েছে রাইটস ইসু (সংস্থার শেয়ারহোল্ডারদের বাড়তি শেয়ার বিক্রি) এবং কিউআইপি-র (যোগ্য লগ্নিকারী সংস্থাকে শেয়ার বিক্রি)
মাধ্যমেও। আইপিও, রাইটস ইসু এবং কিউআইপি— তিনটি মিলিয়ে ২০২৪-এ সংস্থাগুলি বাজার থেকে তুলেছে ৩.১০ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি, যা নজিরবিহীন। দুর্বল শেয়ার বাজারে নতুন ইসুর এমন সাফল্য ইঙ্গিত দেয়, বড় মেয়াদে দেশ সম্পর্কে লগ্নিকারীদের এখনও আস্থা বহাল।

Advertisement

বাজারে একের পর এক নতুন ইসু আসার অর্থ নয়া সংস্থা, নতুন প্রকল্প, আরও লগ্নি, কর্মসংস্থান ও আর্থিক অগ্রগতি। তবে সংগৃহীত সব টাকা সংস্থার তহবিলে যায় না। অনেক ক্ষেত্রে উদ্যোক্তা বা পুঁজি প্রদানকারীরা তাঁদের দখলে থাকা শেয়ার বেচে আইপিও মারফত। এ ক্ষেত্রে ইসু থেকে প্রাপ্ত অর্থ যায় তাদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে। আইপিও-র পরে সব নতুন সংস্থার শেয়ার নথিবদ্ধ হয় বাজারে। যার হাত ধরে এক্সচেঞ্জগুলিতে বাড়ছে সব শেয়ারের মোট মূল্য (মার্কেট ক্যাপিটালাইজ়েশন)।

সম্প্রতি নজরে পড়ছে অনেক ছোট এবং মাঝারি সংস্থার আইপিও। গত কয়েক মাসে যে সব বড় সংস্থা প্রথম বার বাজারে শেয়ার ছেড়েছে তার মধ্যে ছিল হুন্ডাই মোটরস, বজাজ হাউসিং ফিনান্স, এনটিপিসি গ্রিন এবং সুইগি। বড় মাপের ইসুগুলি ভাল ভাবে উতরে গেলেও, তাদের সকলে শুরুতে ভাল লাভের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি।। যেমন, গাড়ি সংস্থা হুন্ডাই প্রতিটি শেয়ার বাজারে ছেড়েছিল ১৯৬০ টাকা দামে। ২২ অক্টোবর নথিবদ্ধ হয় ১৯৩৪ টাকায়। বর্তমান দাম ১৭৭২ টাকা। ইসুর আকার বেশি বড় হলে শেয়ার সহজলভ্য হয়। তাই ভাল দাম পেতে সময় লাগে। হুন্ডাই আইপিও-র আকার ছিল ২৭,৮৭০ কোটি টাকা। এটিই এখনও পর্যন্ত দেশের বৃহত্তম আইপিও। এর আগে ছিল এলআইসি-র ২০২২-এ আনা ২১,০০৮ কোটি টাকার ইসু। এ ক্ষেত্রেও এলআইসি-র শেয়ারের দাম বহু দিন পড়েছিল ইসুর দামের বেশ খানিকটা নীচে। সুইগি আইপিও-র পরে ১৩ নভেম্বর তা নথিবদ্ধ হয়। দুর্বল বাজারেও এখন শেয়ারদর ৫৯৫ টাকা। অর্থাৎ দেড় মাসেরও কম সময়ে রিটার্ন প্রায় ৫৩%। এমন লাভ দিয়েছে আরও কিছু ইসু। এ সব দেখেই আইপিও-র বাজারে বেড়েছে ভিড়।

নতুন ইসুতে ৩৫% শেয়ার সংরক্ষিত থাকে ছোট লগ্নিকারীদের জন্য। একজনের ন্যূনতম লগ্নি হয় প্রায় ১৪,৫০০ টাকা। অনলাইনে আবেদন করতে হয়। তাঁর টাকা ব্যাঙ্কে ‘ব্লক’ করে রাখা হয়। কেউ শেয়ার পেলে টাকা তার ব্যাঙ্ক থেকে সংস্থার ব্যাঙ্কে যায়। আইপিও বন্ধ হওয়ার মাত্র তিনটি কাজের দিনের মধ্যেই নতুন শেয়ার নথিবদ্ধ করতে হয় বাজারে। প্রাপ্ত শেয়ার তাৎক্ষণিক ভাবে বিক্রি করা যায় বা ধরে রাখা যায়।

(মতামত ব্যক্তিগত)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement