Haimanti Ganguly

স্বামীর পর হৈমন্তীর পাশে তাঁর মা-ও, বললেন, ‘আমার মেয়ে দু’নম্বরি কাজ করতেই পারে না’

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম জড়ানোর পর আসতেই তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে দাবি। মেয়ের গতিবিধি সম্পর্কে তিনিও কিছু জানেন না বলে রবিবার দাবি করেছেন হৈমন্তীর মা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাকসাড়া শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৫:০৬
Share:

মেয়ে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণিত করবে, দাবি হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের (ডান দিকে) মা বুলা গঙ্গোপাধ্যায়ের। —নিজস্ব চিত্র।

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম জড়ালেও তাঁর মেয়ে হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দোষ। কারণ তাঁর মেয়ে কোনও ‘দু’নম্বরি’ করতে পারে না। রবিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এমনই দাবি করলেন হৈমন্তীর মা বুলা গঙ্গোপাধ্যায়। দিন দুয়েক আগেই যিনি মন্তব্য করেছিলেন, তাঁর মেয়ে মরে গিয়েছে।

Advertisement

এই দুর্নীতি মামলায় ধৃত অভিযুক্ত তাপস মণ্ডলের ‘ঘনিষ্ঠ’ গোপাল দলপতির ‘প্রাক্তন স্ত্রী’ হৈমন্তীর নামে অভিযোগ, তাঁর বিভিন্ন সংস্থার অ্যাকাউন্টে চাকরিপ্রার্থীরা টাকা পাঠাতেন। যে অভিযোগ করেছেন নিয়োগ মামলায় আর এক অভিযুক্ত তথা সিবিআই হেফাজতে থাকা যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ। যদিও হৈমন্তীর মায়ের দাবি, ‘‘আমার মেয়ে সৎ বংশের মেয়ে। ও কোনও দু’নম্বরি করতে পারে না। ও খুবই ভাল মেয়ে। পরে সকলে বুঝতে পারবে, মেয়ে কত সৎ ছিল।’’

হৈমন্তীর নাম প্রকাশ্যে আসতেই তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে দাবি। মেয়ের গতিবিধি সম্পর্কে তিনিও কিছু জানেন না বলে দাবি করেছেন হৈমন্তীর মা। রবিবার হাওড়ার উত্তর বাকসাড়া রোডের কাটুরিয়া পাড়ায় বাড়ি থেকে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘মেয়ে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। সে কোথায় যাবে, কী করবে, তা আমি কী করে জানব? আমি কোনও ঝামেলায় জড়াতে চাই না। আমার মেয়ে কোথায়, সেটা আমি কী করে জানব? (টিভিতে) খবরে বলছে বলে তা-ই এ কথা বললাম। মেয়ে নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত কি না, তা যারা তদন্ত করছে, তারা বলতে পারবে।’’

Advertisement

সিবিআই সূত্রে দাবি, মুম্বইয়ের ঠিকানায় আরমান গঙ্গোপাধ্যায় (গোপালের পরিবর্তিত নাম) এবং হৈমন্তীর নামে একটি সংস্থার অ্যাকাউন্টে কয়েক লক্ষ টাকার বেআইনি লেনদেনের সূত্র মিলেছে। যদিও এ নিয়ে প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেননি হৈমন্তীর মা। তাঁর কথায়, ‘‘এটা ভেরিফাই (খতিয়ে) করে দেখুক তদন্তকারীরা। আমি কী করে বলব?’’ তাঁর মেয়ে বিয়ের আগে চাকরি করতেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজেও হৈমন্তী যুক্ত বলে দাবি। হৈমন্তীর মা বলেন, ‘‘বিয়ের আগে চাকরি করত আমার মেয়ে। বিয়ের পর ব্যবসা, দানধ্যান করত। অনাথ ছেলেমেয়ের খাবারদাবার, জামাকাপড় দিত।’’ তবে আজকাল মেয়ের সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন। শুধু মেয়েই নয়, জামাই গোপাল দলপতি সম্পর্কেও কিছু জানেন না বলেও দাবি। তাঁর কথায়, ‘‘গোপালের সঙ্গে আমাদের কোনও যোগাযোগ নেই। বহু কাল আগে যখন মেয়েকে বিয়ে করেছিল, তখন যোগাযোগ ছিল। গোপালের সঙ্গে কী ভাবে মেয়ের পরিচয় হল, তা জানি না। অ্যাডাল্ট (প্রাপ্তবয়স্ক) মেয়ে... ভালবাসা করে বিয়ে করেছে।’’ সেই সঙ্গে তাঁর আরও দাবি, ‘‘গোপালের আদবকায়দা ভাল লাগছে না বলে মেয়ে (এই সম্পর্ক থেকে) সরে যেতে চাইছে।’’

হৈমন্তীর বেহালার ফ্ল্যাটের সামনে আবর্জনা স্তূপ থেকে শনিবার কয়েকটি কাগজে চাকরিপ্রার্থীদের রোল নম্বর পাওয়া গিয়েছে বলেও দাবি। যদিও ওই কাগজগুলি অন্য কেউ ‘প্রাক্তন স্ত্রী’র ফ্ল্যাটের সামনে ফেলে দিতে পারেন বলে দাবি আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে দাবি করেছিলেন গোপাল। হৈমন্তীর মায়েরও প্রায় একই দাবি। তিনি বলেন, ‘‘কেউ যদি মেয়ের বাড়ির সামনে কিছু ফেলে যায়, তা হলে সে কেন দায়ী হবে।’’ যদিও তাঁর মায়ের মন্তব্য, ‘‘আমি বুঝতে পারছি, মেয়ে এক দিন প্রকাশ্যে আসবে। ওর কাজকর্মের জন্য সামনে আসতে দেরি হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement