মানিক মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল মতামত। ফাইল চিত্র।
প্রাথমিকে নিয়োগ মামলায় মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না সিবিআই। মঙ্গলবার এমন নির্দেশই দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এ ব্যাপারে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিককে যে রক্ষাকবচ দেওয়া হয়েছিল তা বজায় থাকবে। যদিও তাতে মানিকের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর হেফাজতে থাকার বিষয়ে কোনও প্রভাব এখনই পড়বে না। ইডির গ্রেফতারির বিরুদ্ধে মানিক আদালতে যে আবেদন করেছিলেন, তার শুনানি আপাতত স্থগিতই রাখল আদালত।
মঙ্গলবার টেট সংক্রান্ত কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে মানিকের মামলার শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টে। আদালত মানিকের রক্ষাকবচ বজায় রাখলেও অবশ্য জানিয়েছে, টেট মামলায় সিবিআই তদন্ত চালিয়ে যাবে। চার সপ্তাহের মধ্যে সিবিআইকে তদন্তে অগ্রগতির রিপোর্টও জমা দিতে হবে আদালতে। এর পাশাপাশি টেট মামলায় যে ২৬৯ জনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তা-ও আপাতত স্থগিত রেখে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, ওই ২৬৯ জনকেও মামলায় যুক্ত করতে হবে। কেন না ওঁদের বক্তব্য না শুনেই চাকরি ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় গত ১০ অক্টোবর মানিককে রাতভর জেরা করার পর গ্রেফতার করেছে ইডি। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ইডির অভিযোগ ছিল, তিনি তদন্তে সহযোগিতা করেছেন না। ইডির এই গ্রেফতারির বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মানিকের আইনজীবী মুকুল রোহতগী। তিনি বলেন, ‘‘এই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট রক্ষাকবচ দিয়েছে মানিককে। সিবিআইকে বলা হয়েছে, তারা গ্রেফতার করতে পারবে না মানিককে।’’ তার পরেও কেন ইডি গ্রেফতার করল বিধায়ককে? মুকুল বলেন যে, ‘‘মামলাটির দ্রুত শুনানির ব্যবস্থা করুক শীর্ষ আদালত।’’ যদিও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসুর বেঞ্চ তখন জানিয়ে দেয়, পরের সপ্তাহের শুরুতে মামলাটি শুনবে আদালত। তার আগে পর্যন্ত মানিককে ইডির হেফাজতেই থাকতে হবে।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গত ২৩ জুলাই গ্রেফতার হন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পার্থের বাড়িতে তল্লাশির সময়েই ইডি গিয়েছিল মানিকের বাড়িতেও। তখনই জারি হয় ‘লুক আউট নোটিস’। মানিককে সিবিআই দফতরে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ও। তিনি জানিয়েছিলেন, চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিককে গ্রেফতারও করতে পারবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান মানিক। শীর্ষ আদালত তাঁকে রক্ষাকবচ দিলেও তদন্তে সহযোগিতার নির্দেশ দেয়। কিন্তু গত ১০ অক্টোবর মানিককে গ্রেফতার করে ইডি।