সুপ্রিম রায়ে লাভ হল না মানিকের। ফাইল চিত্র।
হারানো পদ ফিরে পাবেন না বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি পদ থেকে তাঁর অপসারণে সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়েছে মঙ্গলবার। তার পরেই মানিককে ওই পদে ফিরিয়ে আনা হবে কি না, সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল সর্বত্র। উত্তর খুঁজতে দেখা গেল সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আপাতত স্বস্তি পেলেও তাঁর হারানো পদ নিয়ে মানিক থেকে গিয়েছেন অন্ধকারেই। কারণ শুনানি চলাকালীন মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট আগেভাগেই জানিয়ে রেখেছে, অপসারণে স্থগিতাদেশ জারি হলেও মানিককে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি পদে পুনর্বহাল করা যাবে না।
টেট দুর্নীতিতে অভিযুক্ত মানিকের অপসারণের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। টেট মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মানিক। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতে হাই কোর্টের রায়ের সমালোচনা করে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অনির্বাণ বসু এবং বিচারপতি বিক্রম নাথের ডিভিশন বেঞ্চ। দুই বিচারপতি বলেছিলেন, ‘‘হাই কোর্ট ওই নির্দেশ দেওয়ার আগে রাজ্যের মতামত জানতে চায়নি। মানিককে অপসারণের ব্যাপারে আদালতের ওই সিদ্ধান্ত সঠিক প্রক্রিয়ায় হয়নি।’’ তবে একই সঙ্গে মানিককে আপাতত ওই পদে ফিরিয়ে আনাও সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। বলা হয়েছে, ‘‘যে হেতু মানিকের পর ওই পদে ইতিমধ্যেই এক জনকে নিয়োগ করা হয়ে গিয়েছে এবং সে ব্যাপারে নিয়ম মেনে রাজ্য নির্দেশিকা জারি করেই নিয়োগ করেছে, তাই সেই পদে মানিককে এখনই ফিরিয়ে আনা যাবে না।’’
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি পদ থেকে মানিককে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তার পর থেকে মানিকের বিরুদ্ধে কখনও জারি হয়েছে সিবিআইয়ের ‘লুক আউট’ নোটিস, তো কখনও তাঁকে গ্রেফতার করেছে ইডি। আপাতত তিনি ইডি হেফাজতেই। তবে ইতিমধ্যে তাঁর পুরনো পদে নিয়োগ হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি পদে গৌতম পালকে নিয়োগ করেছে রাজ্য। তিনি কাজে যোগ দেওয়ার পর নতুন করে টেটে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে পর্ষদের তরফে। এরই মধ্যে মানিকের অপসারণ সংক্রান্ত মামলায় রায় দিল আদালত। চার সপ্তাহের জন্য বাড়ানো হল মানিকের সিবিআই গ্রেফতারি এড়ানোর রক্ষাকবচ, স্থগিতাদেশ দেওয়া হল অপসারণের রায়েও। কিন্তু কোনওটিই কার্যক্ষেত্রে তেমন সাহায্য করল না মানিককে। ফলত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যানকে থাকতে হবে ইডির হেফাজতেই, আবার তিনি তাঁর পুরনো পদেও ফিরতে পারবেন না।