TET 2022

কড়া নিরাপত্তায় নির্বিঘ্নেই মিটল টেট, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বললেন, কোনও অভিযোগ আসেনি

রবিবারের টেট নিয়েও কমবেশি অভিযোগ উঠেছে। সেই অভিযোগ যদিও অস্বীকার করেছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি জানিয়েছেন, টেট মিটেছে নির্বিঘ্নে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২২ ১৯:৩১
Share:

নির্বিঘ্নে মিটল রবিবারের টেট। উত্তরপত্রের কার্বন প্রতিলিপি হাতে বার হলেন পরীক্ষার্থীরা। — নিজস্ব চিত্র।

মোটামুটি নির্বিঘ্নেই শেষ হল প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা (টেট)। ছোটখাটো অভিযোগ উঠলেও তার কোনও আঁচ পড়েনি পরীক্ষায়। কড়া নিরাপত্তায় রবিবার টেট দিলেন প্রায় ৭ লক্ষ পরীক্ষার্থী।

Advertisement

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির মামলা এখনও চলছে আদালতে। তাতে বার বার রাজ্যকে কড়া ধমক দিয়েছে হাই কোর্ট। রবিবারের টেট নিয়েও কমবেশি অভিযোগ উঠেছে। সেই অভিযোগ যদিও অস্বীকার করেছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি জানিয়েছেন, টেট মিটেছে নির্বিঘ্নে। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের কাছে কোনও অভিযোগ আসেনি। পরীক্ষা নির্বিঘ্নেই হয়েছে।’’ অভিনন্দন জানিয়েছেন পরীক্ষার্থীদেরও। তিনি বলেন, ‘‘সব পরীক্ষার্থীকে অভিনন্দন, শুভেচ্ছা জানাই। গণউৎসবের মতো পরীক্ষায় শামিল হয়েছেন তাঁরা।’’ আর দু্র্নীতি প্রসঙ্গে স্পষ্টই জানিয়েছেন, পিছনের দিকে না ফিরে সামনে দেখা উচিত।

প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদদের সভাপতি গৌতম পাল ধন্যবাদ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীকে। বলেছেন, ‘‘রবিবার যে এত সুষ্ঠু ভাবে পরীক্ষা মিটেছে, তার জন্য কয়েক জনকে ধন্যবাদ না দিলেই নয়। প্রথমেই ধন্যবাদ মুখ্যমন্ত্রীকে।’’ এর পর তিনি মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, পুলিশ, প্রশাসন, জেলাস্তরের আমলা, শিক্ষাকর্তাদের ধন্যবাদ দিয়েছেন। পর্ষদের আধিকারিক, বিভাগীয় কর্মীদেরও ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।

Advertisement

২০১৭ সালে শেষ বার হয়েছিল টেট। তার পর আবার রবিবার হল প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা। বিক্ষিপ্ত কয়েকটি ঘটনা ছাড়া নির্বিঘ্নে মিটেছে পরীক্ষা। কয়েকটি স্কুলে পরীক্ষার্থীদের ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। জানা গিয়েছে, সঠিক সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে পারেননি বলেই তাঁদের প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছিল। পরীক্ষাকেন্দ্রে ব্যাগ রাখা নিয়েও কিছু কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন। তাঁরা জানান, পরীক্ষাকেন্দ্রে ব্যাগ রাখার জায়গা নেই।

পরীক্ষা শুরুর পরই প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, কোনও প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘যে ছবি ঘুরছে, তা আসলে ভুয়ো প্রশ্নের। পর্ষদকে বললাম। পর্ষদ খোঁজ নিল। জানল ‘ফেক’। মমতার সরকার যাতে পরীক্ষা না নিতে পারে, তার চেষ্টা চলছে। পরীক্ষা নেওয়া গিয়েছে।’’

রবিবার পরীক্ষা দিয়ে খুশি পরীক্ষার্থীরা। বিভিন্ন অভিযোগের মাঝেই তাঁরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, পরীক্ষা ভাল হয়েছে। ভাল হয়েছে প্রশ্নপত্র। চাকরি পাওয়া নিয়ে তাঁরা যথেষ্ট আশাবাদী। প্রথম বারের পরীক্ষার্থীদের কেউ কেউ জানিয়েছেন, সময়ে শেষ করতে কিছুটা সমস্যার মুখে পড়েছেন। পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে আসা সকল পরীক্ষার্থীর হাতে ছিল ওএমআরশিটের (উত্তরপত্র) প্রতিলিপি। দুর্নীতি রুখতে এ বার অতিরিক্ত সতর্কতা নিয়েছে পর্ষদ। তার মধ্যে অন্যতম হল এই উত্তরপত্রের প্রতিলিপি। শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, এ বার দু’টি উত্তরপত্র রয়েছে। অর্থাৎ উত্তরপত্রের কার্বন প্রতিলিপি। পরীক্ষার্থীরা একটা উত্তরপত্র বাড়ি নিয়ে যাবেন। যাতে পরে মিলিয়ে দেখতে পারেন। এক পরীক্ষার্থী তানিয়া রায় জানালেন, এতে সুবিধা হবে তাঁদের। বাড়ি গিয়ে দেখতে পারবেন ঠিক কী ভুল করেছেন।

রবিবারের পরীক্ষায় ছিল কড়া নিরাপত্তা। শিক্ষামন্ত্রী নিজেই গোটা ব্যবস্থার কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন হচ্ছে। তল্লাশি চলছে। পরীক্ষাকেন্দ্রে দু’টি পদ্ধতিতে বায়োমেট্রিক যাচাই হচ্ছে। ফেস রিকগনিশন। অর্থাৎ মুখমণ্ডল চিনে রাখা এবং আঙুলের ছাপ রেকর্ড। এ ছাড়া পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে থাকা মোবাইল, পেজার, ব্লুটুথ চিহ্নিত করার জন্য প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা রয়েছে। ১৪৬০টি পরীক্ষা কেন্দ্রের কোথায় কী হচ্ছে, পর্ষদের কন্ট্রোল রুমে বসে দেখা যাচ্ছে।’’ এই নিয়ে বিরোধীরা অভিযোগ করলেও পড়ুয়ারা করেনি। বিরোধীদের দাবি, আগের টেট নিয়ে দুর্নীতির কারণেই এত ব্যবস্থা। যদিও শিক্ষামন্ত্রী অভিযোগ উড়িয়ে জানিয়েছেন, এখন লক্ষ লক্ষ মোবাইল ঘুরছে। কারচুপির সুযোগ বেশি বলেই নজরদারি বেশি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement