প্রাথমিকের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নম্বর বৃদ্ধির ক্ষেত্রে পৃথক পৃথক দরের কথা বিচারককে জানিয়েছেন সিবিআই। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
পরীক্ষায় খাতায় কত নম্বর বাড়বে, তা ঠিক করতেন পরীক্ষার্থীরাই। এ ব্যাপারে নিয়োগ দুর্নীতির ‘দালাল’দের নীতি ছিল অনেকটা ‘ফেলো কড়ি মাখো তেল’ গোছের। কত নম্বরকে কোথায় ঠেলে তুলতে হবে, তার শতাংশের ভিত্তিতে ঠিক হত দর। সেই দর দিলেই কাঙ্ক্ষিত নম্বর পেতেন শিক্ষকতার চাকরি চাওয়া পরীক্ষার্থীরা। ‘গুড়’-এর পরিমাণ মেপে ‘মিষ্টি’ হত মার্কশিট। বৃহস্পতিবার নিয়োগ মামলার শুনানির সময়ে বিচারকের কাছে সিবিআই এমনই দাবি করেছে বলে আদালত সূত্রে খবর।
বৃহস্পতিবার আলিপুরের নগর দায়রা আদালতে শুনানি ছিল প্রাথমিকের নিয়োগ দুর্নীতি মামলার। আদালত চত্বরে হাজির করানো হয়েছিল, দুই অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষ এবং তাপস মণ্ডলকেও। শুনানির সময়ে সিবিআই মামলার কেস ডায়েরি পেশ করেন বিচারকের কাছে। সিবিআই সূত্রে খবর, কেস ডায়েরি দেখে তদন্তকারী অফিসারকে তার একটি পাতা পড়তে বলেন বিচারক। তার পর মন্তব্য করেন, ‘‘সময় সময় অভিযোগগুলো বদলে যাচ্ছে…। আপনার মূল অভিযোগগুলো কী?’’ তারই জবাবে সিবিআইয়ের আইনজীবী বিচারককে জানান, প্রাথমিকের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নম্বর বৃদ্ধির ক্ষেত্রে পৃথক পৃথক দরের কথা। এমনকি সেই দর কিসের ভিত্তিতে নিরূপিত হত, তা-ও উদাহরণ দিয়ে বোঝান তিনি।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, বিচারককে আইনজীবী বলেন, কেউ যদি ৭০ শতাংশ নম্বর পেয়ে থাকেন, তবে সেই নম্বরকে ৭২ শতাংশ করার জন্য আলাদা দর। আবার ৬৫ শতাংশকে ৭২ শতাংশ করার আলাদা দাম এবং অপেক্ষাকৃত বেশি দাম দিতে হত। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ভাবেই প্রার্থীদের প্রাপ্য নম্বরের শতাংশের বিচারে টাকা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সিবিআই। এ ভাবেই ‘গুড়’-এর পরিমাণ মেপে ‘মিষ্টি’ হত মার্কশিট। অর্থ যেত ‘দালাল’দের হাতে এবং সেখান থেকে অন্যত্র।