—ফাইল চিত্র।
দীর্ঘ সময় ধরে তীব্র গরম চলছে কলকাতা এবং সমগ্র দক্ষিণবঙ্গে। গরমের এই দীর্ঘ ‘স্পেল’ কলকাতায় বেশ বিরল। এমনকি, গত ৫০ বছরে এপ্রিল মাসে রাজ্যে গরমের এ হেন তীব্রতা এবং স্থায়িত্ব একসঙ্গে খুব একটা দেখা যায়নি। তেমনটাই জানিয়েছেন আলিপুর আবহাওয়া দফতরের আধিকারিক সৌরিশ বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘‘গত ৫০ বছরের হিসাব যদি দেখি, কলকাতা বা দক্ষিণবঙ্গের অন্যত্র এই ধরনের গরম দু’এক বার পড়েছে। তাপমাত্রাও আগে এমন হয়েছে। তবে এ বার এই তীব্র গরমটা তুলনামূলক বেশি দিন ধরে স্থায়ী হচ্ছে। আগামী সাত দিন তাপমাত্রার খুব একটা পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা নেই।’’
হাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী সাত দিন তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি থাকবে দক্ষিণবঙ্গে। তবে সোমবার এবং মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামের দু’একটি জায়গায় সামান্য বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এই দু’দিনে তাপমাত্রাও দেড় থেকে দুই ডিগ্রি কমতে পারে। তবে গরমের অস্বস্তি বহাল থাকবে গোটা দক্ষিণবঙ্গেই। এখনই তা থেকে মুক্তির সম্ভাবনা নেই।
কলকাতা এবং আশপাশের এলাকায় ২২ থেকে ২৩ এপ্রিলের মধ্যে তাপপ্রবাহ না-ও থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন সৌরিশ। তিনি বলেন, ‘‘তাপপ্রবাহ বলতে আমরা যা বুঝি, তার সবক’টি শর্ত হয়তো ২২-২৩ তারিখে কলকাতা এবং আশপাশের এলাকায় পূর্ণ হবে না। তবে অস্বস্তিকর গরম সর্বত্র থাকবে।’’
গত ৫০ বছরের আবহাওয়ার ইতিহাস বলছে, ১৯৮০ সালে এক বার কলকাতায় ৪১.৭ ডিগ্রিতে পৌঁছে গিয়েছিল কলকাতায় এপ্রিলের তাপমাত্রা। এর পর ২০১৬ সালেও তাপমাত্রা ৪১-এ পৌঁছয়। ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে কলকাতায় তাপমাত্রা হয়েছিল ৪১ ছুঁইছুঁই। এ বারও সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। শনিবার পর্যন্ত কলকাতার এ বারের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১৯ এপ্রিল)।
সৌরিশ বলেন, ‘‘এ বার এপ্রিলে বেশি সময় ধরে এত গরম থাকছে। গরমের এই স্পেল আরও লম্বা হতে চলেছে। আপাতত সাত দিন পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হবে না। কলকাতা, হাওড়ায় দু’দিন তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা কমলেও গরমের অস্বস্তি থাকবে।’’
গরম কমবে না, উল্টে দক্ষিণের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গেও তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। ২১ এপ্রিল মালদহ এবং দুই দিনাজপুরে তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে। ২৪ এবং ২৫ তারিখেও এই জেলাগুলিতে তাপপ্রবাহ হতে পারে। তবে উত্তরের দু’একটি জায়গায় বৃষ্টিও চলবে। যদিও তাতে তাপমাত্রা খুব একটা কমবে না বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস।