ওম: চিড়িয়াখানার সামনে বাচ্চা কোলে বাবা। রবিবার। দেশকল্যাণ চৌধুরী
অবশেষে কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় বঙ্গের আকাশে মেঘ কি কাটছে? আজ, সোমবার পরিষ্কার আকাশের পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। কিন্তু ইংরেজি বছরের শুরু থেকেই মেঘলা দিন আর স্যাঁতসেঁতে ঠান্ডা সয়ে আসা বাঙালির বড় একটা অংশ বুঝে উঠতে পারছে না, সেই পূর্বাভাসে ঠিক কতটা বিশ্বাস রাখা যায়!
তবে রবিবার থেকেই শিরশিরে উত্তুরে হাওয়া মালুম হয়েছে। রাত বাড়তেই ইঙ্গিত মিলছে পারদ পতনেরও। আকাশ পরিষ্কার হলে পারদ আরও নামতে পারে বলে জানাচ্ছেন আবহবিজ্ঞানীরা। কারণ, মেঘ কাটলে রোদ উঠবে এবং মাটি গরম হবে। সূর্যাস্তের পরে মাটি তাপ বিকিরণ করবে এবং আকাশ মেঘমুক্ত হয়ে গেলে দ্রুত সেই তাপ বিকিরণ করতে পারবে। তার ফলে রাতের পারদ নামার সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহবিদদের মতে, দিনে রোদ এবং রাতে দ্রুত পারদ নেমে কনকনে ঠান্ডা— গাঙ্গেয় বঙ্গে শীতের আসল চরিত্র এটাই। আকাশ মেঘলা থাকলে শীতের অনুভূতি থাকে ঠিকই, কিন্তু অনেক আবহবিদ মনে করেন, সেটা আসলে অনেকাংশে শীতের ছদ্মবেশ।
আরও পড়ুন: প্রতিনিধি না-থাকলে কে বলবে অ্যাংলোদের কথা
রবিবারেও যেমন দিনভর শীত-সঙ্গ পাওয়া গিয়েছে কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় বঙ্গে। কিন্তু বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে যে-সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দিয়ে শীতের বিচার করা হয়, কলকাতায় এ দিন তা ছিল ১৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি বেশি। শীতকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে কম থাকাই দস্তুর। হাড়কাঁপানো শীতের জন্য ‘বিখ্যাত’ বীরভূমের শ্রীনিকেতনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫.৮ ডিগ্রি, স্বাভাবিকের থেকে পাঁচ ডিগ্রি উপরে! মুর্শিদাবাদ, বাঁকুড়া, আসানসোলেও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বেশি। কিন্তু মেঘলা আবহাওয়ার জন্য দিনের তাপমাত্রা বাড়তে পারছে না, তাই শীতের অনুভূতিটুকু মিলছে। .
আরও পড়ুন: ক্যানসার-তথ্যে সমান অনাস্থা কেন্দ্র ও রাজ্যের!
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, সোমবার আকাশ পরিষ্কার হলেই তাপমাত্রা ঝুপ করে নেমে যেতে পারে। এই আচমকা পতনের ফলে বেশি হতে পারে শীতের অনুভূতিও। বইতে পারে উত্তুরে বাতাস। এ-সব শুনে শীতবিলাসী বাঙালি খুশি হতেই পারে। কিন্তু রোদ ঝলমলে দিনের পাশাপাশি কনকনে রাত ক’দিন পাওয়া যাবে, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে আবহবিদদের একাংশের মধ্যেই। অনেকেই বলছেন, চলতি সপ্তাহের মাঝামাঝি ফের বঙ্গের আকাশে মেঘের আনাগোনা দেখা যেতে পারে। ফের মাথাচাড়া দিতে পারে রাতের পারদ। তা হলে কি জাঁকিয়ে শীতের জন্য পৌষের সংক্রান্তি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে, প্রশ্ন আমজনতার।