প্রশান্ত কিশোর
পুরভোট সামনেই। গত লোকসভা নির্বাচনে ঝাড়গ্রাম আসনটি হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের। তখন ওয়ার্ড ভিত্তিক ফলেও ঝাড়গ্রামে এগিয়ে ছিল বিজেপি। তাই পুরভোটে যাতে ঘুরে দাঁড়ানো যায় তার জন্য ইতিমধ্যেই মাঠে নেমে পড়েছে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের (পিকে) সংস্থা।
লোকসভা নির্বাচনের পরে পিকের সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করেছে তৃণমূল। সম্প্রতি হওয়া তিনটি বিধানসভা উপ-নির্বাচনেও কাজ করেছে তারা। এবার পুরভোটের ঘণ্টা বাজতেই মাঠে নেমে সমীক্ষার কাজ শুরু করে দিয়েছে টিম পিকে। অরণ্যশহরে ইতিমধ্যেই তৃণমূলের কয়েকজন প্রাক্তন কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বলেছেন পিকের প্রতিনিধিরা। সেখানে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, বিরোধী দলের নেতা-কর্মী, কাজের খতিয়ান-সহ নানা বিষয় নিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন তাঁরা। জানতে চাওয়া হয়েছে লোকসভা ভোটের বুথভিত্তিক ফলাফল। যেখানে খারাপ ফল হয়েছে সেখানে কোনও অন্তর্ঘাত রয়েছে কি না সেটাও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
২০১৮ সালে তৃণমূলের ক্ষমতাসীন পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক (সদর) সুবর্ণ রায় এখন পুর-প্রশাসকের দায়িত্বে রয়েছেন। লোকসভা ভোটে ঝাড়গ্রাম জেলায় দলের বিপর্যয়ের পরে শুভেন্দু অধিকারীকে জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সহ পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দিয়েছেন তিনি।
গত লোকসভা ভোটে ঝাড়গ্রাম শহরের ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১০টিতেই এগিয়ে ছিল বিজেপি। ৮টি এগিয়ে ছিল তৃণমূল। এছাড়া তৃণমূল পরিচালিত বিগত ঝাড়গ্রাম পুরবোর্ডের আমলে পরিষেবার মান নিয়েও অনেক অভিযোগ রয়েছে। তার সঙ্গে রয়েছে শহর তৃণমূলের গোষ্ঠী কাজিয়া। এই পরিস্থিতিতে ঝাড়গ্রাম নিয়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বও বিব্রত। সূত্রের খবর, সেই কারণেই পুরভোট ঘোষণার আগেই পিকে টিমকে মাঠে নামিয়ে প্রকৃত চিত্র বোঝার চেষ্টা হচ্ছে। পিকের সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাক্তন কাউন্সিলরদের সঙ্গে কথা বলার পরে এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গেও কথা বলা হবে। তারপরেই পুরভোটের রণকৌশল ঠিক হবে। প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে মাথায় রাখা হবে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কথা।
কী জানতে চাওয়া হচ্ছে? এক প্রাক্তন কাউন্সিলরের দাবি, ‘‘লোকসভা ভোটে আমার ওয়ার্ডে দলের কারা অন্তর্ঘাত করেছেন সেটা জানতে চেয়েছেন পিকের প্রতিনিধিরা।’’ আরেক প্রাক্তন কাউন্সিলরের দাবি, তাঁর থেকে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কাউকে দলে নিলে পুরভোটে তৃণমূলের ফল ভাল হতে পারে কি না সেটাও জানতে চাওয়া হয়েছে। দলের কর্মীদের মধ্যে কারা সব শিবিরেই থাকেন সেই বিষয়েও খোঁজ নেওয়া হয়েছে। তথ্য চাওয়া হয়েছে স্থানীয় ক্লাবগুলি সম্পর্কেও।