প্রতীকী ছবি।
ক্রমবর্ধমান করোনা সংক্রমণের মধ্যে চারটি শ্রেণির ক্লাস চলায় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের স্কুলে যেতেই হচ্ছে। কিন্তু তাঁদের কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে ‘কোয়রান্টিন লিভ’ বা নিভৃতবাসের ছুটির ব্যবস্থা হয়নি। অথচ অতিমারির তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা ক্রমশই তীব্র হচ্ছে। এই অবস্থায় ইংরেজি নতুন বছরে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের দাবি, ওই ছুটি মঞ্জুর করে রাজ্যের শিক্ষা দফতরকে বিজ্ঞপ্তি অবিলম্বে প্রকাশ করতে হবে।
শিক্ষক শিবিরের বক্তব্য, করোনা হুহু বাড়লেও নবম থেকে দ্বাদশের পড়ুয়াদের জন্য স্কুলে পঠনপাঠন চালু রাখতেই হচ্ছে। তদুপরি পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, মিড-ডে মিলের জিনিসপত্র বিলি-সহ নানান কাজের জন্য শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের স্কুলে না-গেলেই নয়। এর মধ্যে বেশ কিছু শিক্ষক-শিক্ষিকার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষক-শিক্ষিকা বা শিক্ষাকর্মীদের কারও করোনা হলে তাঁরা নিভৃতবাসের ছুটি পাবেন কি না, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। সংক্রমিত সরকারি কর্মীদের জন্য এই ছুটির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেছে অর্থ দফতর। কিন্তু সরকার পোষিত ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য শিক্ষা দফতর এখনও পর্যন্ত সেই বিজ্ঞপ্তির কোনও ‘ম্যাচিং অর্ডার’প্রকাশ করেনি বলে শিক্ষা শিবিরের অভিযোগ।
খড়দহের পাতুলিয়া গার্লস হাইস্কুলের এক শিক্ষিকা জানান, তাঁর করোনা হয়েছিল ৫ ডিসেম্বর। সে জন্য তিনি ১৪ দিন স্কুলে যেতে পারেননি। ওই শিক্ষিকা বলেন, “আমার এই ১৪ দিনের ছুটিটা কোয়রান্টিন লিভ না মেডিক্যাল লিভ, এখনও তা জানি না। আমাকে এখনও পর্যন্ত অনুপস্থিত দেখানো হচ্ছে। স্কুলের ভারপ্তাপ্ত শিক্ষিকা জানিয়েছেন, আমি কী ছুটি পাব, জেলা স্কুলের পরিদর্শকের সঙ্গে কথা বলে তিনি তা জানাবেন। কেন আমি কোয়রান্টিন লিভ পাব না?”
নিভৃতবাসের ছুটির দাবিতে শিক্ষক সংগঠনগুলিও সরব হয়েছে। বৃহত্তর গ্র্যাজুয়েট টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্পাদক সৌরেন ভট্টাচাৰ্য বলেন, “কোভিড আক্রান্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারা মেডিক্যাল লিভ নিয়ে বাড়িতে থাকছেন। কোভিড-পরবর্তী শারীরিক জটিলতা থাকা সত্ত্বেও স্রেফ ছুটি বাঁচাতে তাঁরা কিছুটা সুস্থ হয়েই কোনও ক্রমে বিদ্যালয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছেন। কেউ কেউ হাঁচি-কাঁশির মতো উপসর্গ নিয়েও স্কুল করে চলেছেন। ফলে স্কুলে অন্যদেরও ঝুঁকি থাকছে। আমাদের দাবি, শিক্ষা দফতর অবিলম্বে কোয়রান্টিন লিভের ম্যাচিং বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করুক। তা হলে কোয়রান্টিন লিভ নিয়ে ধোঁয়াশা থাকবে না।”