চলছে খাওয়াদাওয়া। শনিবার সল্টলেকে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
রাস্তার দু’দিকে দুই ছবি। এক দিকে প্রাচুর্যে ভরা আয়োজন, অন্য দিকে পানীয় জলও মিলছে না ঠিক করে।
করুণাময়ীর উন্নয়ন ভবনের সামনে, রাস্তার এ-পার আর ও-পার। ওয়াই চ্যানেলে আট দিন ধরে ন্যায্য বেতনের দাবিতে উস্তি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশেনের শিক্ষকেরা অনশনে বসেছেন। ওই রাস্তারই ঠিক উল্টো দিকে সেন্ট্রাল পার্কে প্যান্ডেল খাটিয়ে চলছে ২১ জুলাইয়ের আয়োজন। ভাত, ডাল, সব্জি, ডিমের ঝোল রান্না হচ্ছে। পানীয় জল, স্নানের জল, শৌচালয়, স্ট্যান্ড ফ্যান— কিছুরই অভাব নেই। অনশনরত শিক্ষকেরা কিন্তু পানীয় জলটুকুও ঠিক মতো পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। বেশির ভাগ সময়ে জল কিনে খেতে হচ্ছে। শৌচালয়ে যেতে হচ্ছে রিকশা করে।
আন্দোলনে শামিল হতে অনশনমঞ্চে এসেছেন বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েক হাজার শিক্ষক। সংগঠনের নেত্রী পৃথা বিশ্বাস নিজেও অনশনে বসেছেন। শনিবার সন্ধ্যায় এক চিকিৎসক রক্তচাপ মাপছিলেন। জিজ্ঞেস করলেন, পরিমাণ মতো জল সকলে খাচ্ছেন কি না। অনশনকারীরা জানালেন, এখন স্বেচ্ছাসেবী কয়েকটি সংগঠন জলের বোতল দিয়ে যাচ্ছেন। সেটাই ভরসা। সেন্ট্রাল পার্ক থেকে কয়েক পেটি জলের বোতল রাস্তার ও দিকে পাঠানো গেল না? প্রশ্নটা অনেকের মনেই এসেছে।
সেন্ট্রাল পার্কে মন্ত্রী সুজিত বসু থেকে শুরু সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘুরে গিয়েছেন বেশ কয়েক বার। প্যান্ডেলের পিছনে রান্নার দায়িত্বে থাকা এক ব্যক্তি জানালেন, ৩৫০ জন রাঁধুনি ১৭ তারিখ থেকে রান্না করছেন। রান্নার দায়িত্বে থাকা ওই ব্যক্তি বলেন, ‘‘১৭ তারিখ ছিল আলু পটলের তরকারি। পরে এল লাউ, আলু, বাঁধাকপি, পেঁপে। আজ বিকেল থেকে শুরু হয়েছে আলু, কুমড়ো। রবিবার সকালে স্পেশাল আলু পোস্ত হতে পারে। স্ট্যান্ড বাই রয়েছে সোয়াবিন। তবে ডিমের
ঝোল আর ডাল রয়েছে সব সময়েই। যে কেউ খেতে পারেন এসে।’’ এক রাঁধুনি জানান, ধোঁয়া ওঠা গরম ভাত ভোর পাঁচটাতেও পাওয়া যাচ্ছে, আবার সন্ধ্যাবেলাতেও পাওয়া যাচ্ছে।
গরম ভাতের গন্ধ রাস্তার ওপারে পৌঁচ্ছচ্ছে না। অনশন মঞ্চে ইতিউতি বিক্রি হচ্ছে ডাল পকোড়া, মুড়ি, তেলেভাজা, লাল চা। শুধু অনশনকারীরাই তো নন, রোজ কয়েক হাজার হাজার শিক্ষক আসছেন আন্দোলনকে সমর্থন জানাতে। তারাও সারা দিন প্রায় অভুক্তই থাকছেন।