ফাইল চিত্র।
‘উৎসশ্রী’ পোর্টালে ‘বিশেষ’ কারণে স্কুলশিক্ষক বদলির আবেদন ফিরে আসতে থাকায় যে-জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে, তার নিরসনে নতুন একটি নির্দেশ ঘিরেও নবতর সমস্যার আশঙ্কা করছে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন।
সম্প্রতি জেলা স্কুল পরিদর্শকদের কাছ থেকে অধস্তন অফিসারদের কাছে ই-মেল মারফত একটি নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, পাঁচ বছরের কম সময় কোনও স্কুলে পড়ানোর অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কোনও শিক্ষক বা শিক্ষিকা যদি উৎসশ্রী পোর্টালের মাধ্যমে বিশেষ বদলির আবেদন করেন, তা হলেও সেই আবেদন ফেরানো যাবে না। এই ধরনের যে-সব বদলির আবেদন প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছে ইতিমধ্যে ফেরত এসেছে, সেই সব আবেদনও আবার জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে পাঠিয়ে দিতে বলা হচ্ছে। একই সঙ্গে ওই নির্দেশে বলা হয়েছে, বিশেষ বদলির আবেদনকারীরা বর্তমানে যে-স্কুলে আছেন, সেখান থেকে ২৫ কিলোমিটারের কম দূরত্বের কোনও স্কুলে বদলির জন্যও উৎসশ্রী পোর্টালের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। সেই সব আবেদনও প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিতে হবে।
শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, বিশেষ কারণে বদলির আবেদন স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের কাছে ফিরে আসছিল বলে যে-সব অভিযোগ উঠছিল, তার সুরাহা করতেই এই ধরনের নির্দেশ জারি করা হয়েছে। যদি কোনও শিক্ষক-শিক্ষিকা, তাঁর স্ত্রী বা স্বামী কিংবা সন্তান দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হন, যদি কোনও প্রার্থী ৪০ শতাংশ বা তার বেশি শারীরিক প্রতিবন্ধী হন, কোনও শিক্ষিকা যদি বিবাহবিচ্ছিন্না বা স্বামীহারা হন, তা হলে বদলির ক্ষেত্রে তাঁদের বিশেষ অগ্রাধিকারের শ্রেণিভুক্ত বলে ধরা হয়। শিক্ষা দফতরের বক্তব্য, সব সময়েই এই ধরনের আবেদনকারীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়ে থাকে।
বিশেষ বদলি নিয়ে সঙ্কটমোচনে নতুন নির্দেশকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা সাধারণ ভাবে স্বাগত জানালেও তাঁদের প্রশ্ন, এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত শুধু জেলা স্কুল পরিদর্শকদের কাছ থেকে ই-মেলে অধস্তনদের কাছে আসবে কেন? কেন সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করে তা সকলকে জানানো হবে না? কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেসের সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, “যে-নির্দেশের কথা বলা হয়েছে, তা এখনও বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আসেনি। এমনকি বিশেষ কারণে বদলি হতে ইচ্ছুক শিক্ষক-শিক্ষিকারা পাঁচ বছরের কম অভিজ্ঞতায় বদলির আবেদন করতে পারবেন কি না, গেজেট নোটিফিকেশনেও সেটা স্পষ্ট করে বলা নেই। বিজ্ঞপ্তির পরিবর্তন না-করে শুধু জেলা স্কুল পরিদর্শকদের কাছ থেকে ই-মেলে সেই নির্দেশ পাঠানো হয়ে থাকলে স্বচ্ছতার অভাব ঘটবে বলেই আমাদের আশঙ্কা।” একই সুরে মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদারের বক্তব্য, যা কিছু নির্দেশ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দিলে সকলের সুবিধা হয়। নইলে তা সকলের নজরে না-ও পড়তে পারে। এর ফলে অনেকে এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।