চলছে বৈঠক। নিজস্ব চিত্র
অনিয়ন্ত্রিতভাবে তৈরি হওয়া ছোট ছোট চা বাগান বিপদ ঘনিয়ে তুলেছে বড় বাগানগুলির। তাই উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় ইচ্ছেমতো ছোট বাগান তৈরি করতে দিতে চায় না কেন্দ্রীয় টি বোর্ড। আগামী মাসের মধ্যেই উত্তরবঙ্গের ১২টি ব্লকে বড় বাগানের আশেপাশে ছোট চা বাগান তৈরি বন্ধ করতে নোটিশ জারি করছে বোর্ড। মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে একটি আলোচনাসভায় এ কথা জানান বোর্ডের কর্তারা। উত্তরবঙ্গের চা শিল্পে নানা সমস্যার সমাধানসূত্র খুঁজে বের করতে এ দিন বাগান মালিকদের ডেকেছিল বোর্ডের কর্তারা।
নানা সমস্যায় এমনিতেই ধুঁকছে উত্তরবঙ্গের অনেক বড় চা বাগান। তার মধ্যে স্বীকৃতিহীন ছোট বাগানগুলি খারাপ গুণমানের চায়ের জোগান বাড়িয়ে পুরো চা শিল্পেরই বিপদ ডেকে এনেছে বলে দাবি বোর্ড কর্তাদের। তাঁরা জানান, বিজ্ঞানসম্মতভাবে ভাল মানের চা তৈরি হচ্ছে না ছোট বাগানগুলিতে। টি বোর্ডের ডেপুটি চেয়ারম্যান অরুণকুমার রায় বলেন, ‘‘এ ভাবে চা বাগান তৈরি যাতে না হয়, তার জন্য ১২টি ব্লককে চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলিতে যাতে কেউ ইচ্ছেমতো চা বাগান তৈরি করতে না পারে, তার জন্য নির্দেশিকা জারি করা হবে।’’
উত্তরবঙ্গ থেকে মোট উৎপাদিত চায়ের প্রায় ৫৯ শতাংশই এখন ছোট বাগানগুলিতে থেকে আসে। যদিও বেশিরভাগ বাগানের স্বীকৃতি নেই। কয়েকটিতে শ্রমিকরাও কম খরচে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে দাবি একটি মহলের। সব মিলিয়ে চায়ের বাজার নষ্ট হচ্ছে বলে দাবি করেছে ওই মহলটি। যদিও ছোট চা উৎপাদনকারীদের দাবি, তাঁদের বাগানের চা পাতা কিনে নিয়ে অনেক বটলিফ প্লান্ট চালু রয়েছে।
এ দিন আলোচনায় হাজির ছোট একটি বাগানের মালিক বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এটা ঠিকই অনিয়ন্ত্রিতভাবে ছোট বাগান তৈরি হলে তা ক্ষতিকর। তবে যে ছোট বাগানগুলি রয়েছে, সেগুলি নানা সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাদের বরং আরও গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।’’ গত বছর চা চাষের মরসুমে চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি উৎপাদনের জেরে প্রায় ১০ কোটি কেজি চা অবিক্রিত রয়ে গিয়েছিল বলে দাবি টি বোর্ডের একটি সূত্রের। এ বছর তা আরও বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন বড় বাগান মালিক এবং টি বোর্ডের কর্তারাও।
উত্তরবঙ্গে বড় বাগানগুলির বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় অনুদানের টাকা না পাওয়া, জিএসটি প্রদানের ক্ষেত্রে জটিল প্রক্রিয়া এবং শ্রমিক সমস্যার জেরে নানা সমস্যা তৈরি হচ্ছে বলে দাবি করছেন বাগান মালিকরা।