তথাগত রায়। ফাইল চিত্র ।
রোজই ঘোরালো হচ্ছে ট্যাবলো নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য তরজা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিঠির পর ট্যাবলো-বিতর্ক নিয়ে মুখ খুললেন রাজ্য বিজেপি-র বর্ষীয়ান নেতা তথাগত রায়। একটি টুইট বার্তায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে লেখেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার আবেদন, অনুগ্রহ করে প্রজাতন্ত্র দিবসের উৎসবে পশ্চিমবঙ্গের ট্যাবলোর অনুমতি দিন। এতে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বীরত্বের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। নেতাজির সংগঠন আইএনএ ব্রিটিশদের বিশ্বাসকে নাড়িয়ে তাদের দ্রুত দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছিল।’
প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে প্রতিটি রাজ্য থেকে একটি করে ট্যাবলো পাঠানো হয়। কিন্তু এই বছর সেই তালিকা থেকে বাদ যায় পশ্চিমবঙ্গের নাম। তারপর থেকে আরও একবার কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত সামনে উঠে এসেছে। প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে বাংলার ট্যাবলো বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে বলে রবিবার মোদীকে চিঠি লেখেন মমতা। চিঠিতে তিনি জানান, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে তিনি হতবাক এবং ব্যথিত। এতে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অপমান করা হয়েছে। বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী চিঠিতে লেখেন, ‘দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলা অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিল। তাই কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে বাংলার মানুষে ব্যথিত হয়েছেন।’
স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, অরবিন্দ ঘোষ থেকে বিরসা মুন্ডার কী ভূমিকা ছিল, চিঠিতে তা জানিয়ে মমতা আরও লেখেন, ‘বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রথম জাতীয়তাবাদের মন্ত্র ‘বন্দেমাতরম’ লিখেছিলেন। যা পরে জাতীয় গান হয়। রমেশচন্দ্র দত্ত প্রথম ব্রিটিশদের ঔপনিবেশিক অর্থনীতির সমালোচনা করে প্রবন্ধ লিখেছিলেন। সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় দেশে প্রথম জাতীয় রাজনৈতিক সংগঠন ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন তৈরি করেন।’ মমতার বক্তব্য বাংলার ট্যাবলো বাদ দেওয়ার অর্থ এই ইতিহাসকে অস্বীকার করা। এই সিদ্ধান্ত বাঙালিকে অপমান করার সামিল বলেও তিনি লেখেন।
স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষের কথা বিবেচনা করে এ বছর প্রজাতন্ত্র দিবস এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মবার্ষিকী এক সঙ্গে পালন করার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। বিষয়টি নজরে রেখে ট্যাবলো পাঠানোর অনুমতি চেয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কিন্তু তা বাতিল করে কেন্দ্র। গত বছরও কেন্দ্র রাজ্যের কন্যাশ্রী ও একাধিক সামাজিক প্রকল্প-সহ ট্যাবলো বাতিল করে।
কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মবার্ষিকীকে মর্যাদা দিতে ২৩ জানুয়ারি থেকে প্রজাতন্ত্র দিবস উদ্যাপন শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে জানা গিয়েছে যে, নেতাজির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এখন থেকে প্রতি বছরই ২৪ জানুয়ারির পরিবর্তে ২৩ জানুয়ারি থেকে প্রজাতন্ত্র দিবস উদ্যাপন শুরু হবে। তা নজরে রেখেই বাংলার ট্যাবলো থিমের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘নেতাজি ও আজাদহিন্দ বাহিনী’।