তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহা। ফাইল চিত্র।
তাঁর বিরুদ্ধে দলের একাংশ চক্রান্ত করছে বলে দিন দু’য়েক আগেই অভিযোগ করেছিলেন তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহা। দাবি করেছিলেন, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হয় না। সিবিআই তাঁর বাড়িতে হানা দিলেও দলের কেউ খোঁজখবর নেননি বলে আক্ষেপ শোনা গিয়েছিল তাঁর গলায়। তবে এত কিছুর পরেও দল যে তিনি ছাড়ছেন না, সে কথা রবিবার তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
সিবিআই তাঁর বাড়িতে হানা দিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালানোর পর্বে যে ভাবে দলের একাংশের বিরুদ্ধে তাপস খোলাখুলি ক্ষোভ প্রকাশ করছিলেন তাতেই তাঁর তৃণমূল ত্যাগ করে বিজেপিতে যাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছিল। শনিবার তাপস বলেছিলেন, ‘‘আমার দলকে প্রয়োজন নেই, দলের আমাকে প্রয়োজন আছে।’’ কিছুটা ঘুরিয়ে তৃণমূলের ‘সেকেন্ড-ইন-কমান্ড’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি অভিমান ধরা পড়েছিল তাঁর কথায়। তাতেই অনেকে তাঁর দলত্যাগের সম্ভাবনার কথা বলা শুরু করেন।
রবিবার নদিয়ার তেহট্টে নিজের বাড়িতে বসে সে সম্ভাবনা সরাসরি নাকচ করে দেন তাপস সাহা। বলেন, ‘‘দল ছাড়ব কেন? আরে বাবা, দল যখন করছি, তখন বিজেপিতে যাওয়ার প্রসঙ্গই নেই।’’
দলের সঙ্গে তাপসের সংঘাত অবশ্য নতুন কিছু নয়। ২০১১ সালে বিধানসভা ভোটে তেহট্টে দল তাঁকে টিকিট না দেওয়ায় তাপস নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ান। তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে তেহট্টে এসে জনসভা করেন। তার পরেও ভোটে তাপসের চেয়ে পিছিয়ে পড়েন তৃণমূল প্রার্থী। পরে দল তাপসকে ফিরিয়ে নেয়। পরের দুই ভোটে যথাক্রমে পলাশিপাড়া ও তেহট্ট কেন্দ্রে জিতে বিধায়ক হন তিনি।
তাপসের তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে বিজেপির নদিয়া জেলা উত্তর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস বলেন, ‘‘কোনও দুর্নীতিতে যুক্ত নেতাকে আমরা দলে নেব না, এটাই ঠিক হয়েছে। ২০২১-এর বিধানসভায় এ রকম ভুলের কারণে দলের ক্ষতি হয়েছে। তাই ওই ভুল থেকে এই সিদ্ধান্ত ঠিক হয়েছে দলীয় ভাবে।’’ আর তৃণমূলের নদিয়া জেলা উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি কল্লোল খাঁ মন্তব্য করেন, ‘‘উনি দলকে ভালবাসেন। আমার বিশ্বাস হয় না যে, তিনি অন্য রাজনৈতিক দলে যোগ দেবেন। কেউ এ সব রটাচ্ছে।’’