বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।
বিএসএফকে কেন্দ্র করে শাসক ও বিরোধীর যে তরজা শুরু হয়েছিল বিধানসভার অন্দরে, বৃহস্পতিবার তা পৌঁছে গেল ওই সংস্থার দফতরে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তাঁর বিধানসভার সতীর্থদের বক্তব্যের জন্য ‘ক্ষমা চাইতে’ বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গের সদর দফতরে গিয়ে ওই বাহিনীর প্রতিনিধিদের পদ্মফুল এবং মিষ্টি দিয়ে অভিবাদন জানালেন। প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূলের তৃণমূল কংগ্রেসের বর্ষীয়ান সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বললেন, “বিরোধী দলনেতার নেতৃত্বে বিজেপি বিধায়কদের বিএসএফ দফতরে যাওয়া আসলে ওই প্রতিষ্ঠানের গায়ে রাজনৈতিক রং লাগিয়ে তাদের মানহানি করার চেষ্টা। আমরা বিএসএফকে খুবই সম্মান করি। কিন্তু বিজেপি বিএসএফ-কে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে।”
বিএসএফের এক্তিয়ার ১৫ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার করার প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ হয়। পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আনা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার সময় তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ বিএসএফের বিরুদ্ধে নারী নিগ্রহের অভিযোগ করেন। তৃণমূলের অন্য বিধায়করাও সে দিন বিএসএফের বিরুদ্ধে থাকা নানা অভিযোগ বিধানসভায় তোলেন। সেই প্রেক্ষিতে বিএসএফের পাশে থাকার বার্তা দিতে এ দিন তাদের দফতরে যান শুভেন্দু-সহ বিজেপি বিধায়করা। শুভেন্দুর মন্তব্য, “বিএসএফ সম্পর্কে আমার কয়েক জন সহকর্মীর অপশব্দের জন্য আমি ওই প্রতিষ্ঠানের কাছে ক্ষমা চাইতে গিয়েছিলাম। ঘটনাচক্রে ওই সহকর্মীরা তৃণমূলের। আশা করি, বিএসএফের আধিকারিকরা তাঁদের ক্ষমা করবেন।”
শুভেন্দুর এই কর্মসূচিকে কটাক্ষ করে তৃণমূল টুইট করেছে, “বিএসএফের প্রতি আমাদের যে শ্রদ্ধা রয়েছে, তা পদ্মফুল এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য দিয়ে বোঝাতে হয় না। বিরোধী দলনেতা, বিএসএফ সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী। তাকে বিজেপি সুরক্ষা বাহিনী হিসাবে দেখিয়ে গুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না।” আর সুখেন্দুশেখর বলেছেন, “দেশের শ্রদ্ধেয় নিরাপত্তা বাহিনী বিএসএফ। তাদের অতন্দ্র প্রহরার ফলেই আমরা নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারি। আশা করি, বিজেপি বিএসএফের গেরুয়াকরণের চেষ্টা বন্ধ করবে।”
দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ এ দিনই অভিযোগ করেছেন, রাতে জেলায় ফেরার জন্য ট্রেন ধরতে যাওয়ার পথে ‘প্রাইভেট নম্বর’ থেকে ফোন করে তাঁকে হিন্দিতে হুমকি ও গালিগালাজ করা হয়েছে। বিএসএফের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার ফলেই তাঁকে ফোনে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে উদয়নবাবুর অভিযোগ। তাঁর ওই অভিযোগের সত্যাসত্য অবশ্য যাচাই করা যায়নি। তবে বিধায়ক জানিয়েছেন, জেলায় ফিরেই তিনি পুলিশের সাইবার শাখায় আনুষ্ঠানিক ভাবে অভিযোগ জানাবেন।