শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাতা দেওয়ার ঘোষণাকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘দুয়ারে সরকার’-এর ব্যর্থতার প্রমাণ বলে দাবি করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার সমাজমাধ্যমে শুভেন্দু লিখেছেন, ‘দুয়ারে সরকার’-এর বেলুন ফাটিয়ে দিয়েছে ভাইপো!’ দলের তরফে ভাতার ঘোষণাকে শুভেন্দু ‘পিসি-ভাইপো’র রেষারেষি বলেও খোঁচা দিয়েছেন। জবাবে ‘কেন্দ্রের বঞ্চনা’ ও রাজ্য বিজেপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কথা তুলে পাল্টা আক্রমণ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
শুক্রবার ডায়মন্ড হারবার লোকসভা আসনে ৭০ হাজার প্রবীণাকে বার্ধক্য ভাতা দেওয়ার ঘোষণা করেন অভিষেক। শনিবার তাকেই চ্যালেঞ্জ করে চড়া সুরে আক্রমণ করেছেন শুভেন্দু। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, ‘এজেন্সির তাড়ায় অস্থির কেউ কয়লা, গরু, শিক্ষক নিয়োগ আর রেশন কেলেঙ্কারির অর্থের সামান্য কিছু বিলিয়ে ভোটের আগে মানুষকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে।’ এ দিন পূর্ব মেদিনীপুরে একাধিক কালীপুজোর উদ্বোধনেও তৃণমূলকে দুর্নীতির প্রশ্নে বিঁধেছেন তিনি।
শুভেন্দুর অভিযোগের জবাবে পাল্টা কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ সামনে এনেছে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক যখন ভাল, তখন রাজ্যের ২১ লক্ষ বঞ্চিতের যে টাকা আটকে রাখা হয়েছে তা ছেড়ে দিতে বলছেন না কেন?’
রাজ্য সরকারের বার্ধক্য ভাতা সম্পর্কে শুভেন্দু বলেছেন, ‘জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে। তাই ভোটের মুখে বার্ধক্য ভাতা নিয়ে নতুন পথ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ‘দুয়ারে সরকার’-এ জমা আবেদন বাতিল করে ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’ প্রকল্পে আসা আবেদনকে গুরুত্ব দিতে চাইছেন।’ সেই সূত্রেই তাঁর মন্তব্য, ‘তাতেই ঈর্ষান্বিত হয়ে ভাইপো ঝাঁপিয়ে পড়ে অন্তত নিজের কেন্দ্রে ভাতা দেওয়ার কৃতিত্ব নিতে চাইছেন।’ রাজ্যে বার্ধক্য ভাতা বিলিতে অব্যবস্থার অভিযোগ করে শুভেন্দু লিখেছেন, ‘১২ লক্ষ ৬৫টি আবেদন জমা রয়েছে। অথচ এই ভাতার টাকা দেয় কেন্দ্রীয় সরকার।’ অভিষেকের ঘোষণাকে রাজ্য সরকারের প্রশাসনিক ব্যর্থতার প্রমাণ হিসেবে চিহ্নিত করেছিল সিপিএমও।
এ নিয়ে পাল্টা রাজ্য বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্বের দিকে আঙুল তুলেছে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল লিখেছেন, ‘অন্য দল নিয়ে ব্যস্ত না হয়ে বিজেপিতে দিলীপ-সুকান্ত, দিলীপ-শুভেন্দু যে লড়াই লেগেই আছে, সেটা কেন দেখছেন না?’
দলের তরফে ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তকে রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা বলে উল্লেখ করে আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী এ দিন বলেন, ‘‘ভোট আসছে, তাই ভাতার নাম করে ভোট নিতে চাইছেন। রাজনৈতিক দলের তরফে ভাতা ৫০০ বা ৫০০০ টাকা হোক, তা নিয়ে আমার কোনও প্রশ্ন নেই। তবে ভাতা দেওয়ার কথা রাজ্য সরকারের। তাতে সরকার ব্যর্থ।’’