শুভেন্দু অধিকারী পর্বে ফের বাড়ল জটিলতা। —ফাইল চিত্র
শুভেন্দু অধিকারী পর্বে জটিলতা আরও জটিল হল। মঙ্গলবার রাতের বৈঠকের পর তৃণমূল শিবিরের যে দাবি ছিল, বুধবার শুভেন্দু শিবিরের তরফে সেই দাবি নস্যাৎ করে দেওয়া হল। শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, ওই বৈঠকের পর যে ভাবে দলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায় প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছেন ‘সব মিটে গিয়েছে’ বলে, তাতে নন্দীগ্রামের বিধায়ক অসন্তুষ্ট। নিজে মেসেজ করে সৌগত রায়কে সে কথা জানিয়েও দিয়েছেন বলে ওই সূত্রের বক্তব্য। সৌগত মেসেজ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করলেও, তাতে কী লেখা ছিল, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। শুভেন্দুও এখনও পর্যন্ত প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি।
মঙ্গলবার রাতে সৌগত রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যস্থতায় শুভেন্দুর সঙ্গে বৈঠক হয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেখানে ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর (পিকে) ছিলেন। বৈঠকের পর তৃণমূল সূত্রে জানানো হয়, সঙ্ঘাত-পর্বে দাঁড়ি পড়ছে। সকালে একাধিক সংবাদ মাধ্যমে সৌগত দাবি করেন, ‘‘সমস্যা মিটে গিয়েছে। তৃণমূলেই থাকছেন শুভেন্দু। দু’-এক দিনের মধ্যেই সাংবাদিক সম্মেলন করে সিদ্ধান্ত জানাবেন তিনি।’’
কিন্তু বেলা গড়াতেই খবর মেলে, দলীয় নেতৃত্বের এ ভাবে সংবাদ মাধ্যমে মুখ খোলায় অসন্তুষ্ট শুভেন্দু। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, সৌগত রায়কে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পাঠিয়েছেন তিনি। সেখানে শুভেন্দু লিখেছেন, ‘আমার বক্তব্যের এখনও কোনও সমাধান হয়নি। সমাধান না করেই আমার উপর সব চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ৬ ডিসেম্বর আমার প্রেস কনফারেন্স করার কথা ছিল। আমার বক্তব্য জানানোর কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই আপনারা সব প্রেসকে জানিয়ে দিলেন। আমার পক্ষে একসঙ্গে কাজ করা মুশকিল। আমাকে মাফ করবেন’।
আরও পড়ুন: প্রকাশ্যে কবে মুখ খুলবেন শুভেন্দু, অপেক্ষায় পূর্ব মেদিনীপুর
দুপুরের দিকে সাংবাদিক বৈঠক করে সৌগতও মেসেজের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘‘মঙ্গলবারের বৈঠকের বিষয়ে আপনাদের সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে জানিয়েছি। এর পর ওঁর (শুভেন্দু) মনোভাবে কোনও পরিবর্তন হলে সেটা তাঁর বিষয়। আমি বলতে পারব না। এর পর যা বলার শুভেন্দু বলবেন।’’ প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে শুভেন্দুর সঙ্গে আর বৈঠকের সম্ভাবনা নেই।’’
মঙ্গলবার রাতের বৈঠকের আগে পর্যন্ত দল বা দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক যে জায়গায় ছিল, এই ‘মেসেজে’-এর পর কার্যত সেখানেই ফিরে গেল পরিস্থিতি। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশের মতে, ‘‘এই চ্যাপ্টার এখন ক্লোজড।’’ তাঁরা মনে করছেন, এর পর কোনও নাটকীয় পটপরিবর্তন না হলে শুভেন্দুর আর ৭ তারিখে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই।
আরও পড়ুন: ফাইজার ফার্স্ট, বিশ্বে প্রথম কোভিড টিকাকরণ শুরু হচ্ছে ব্রিটেনে
এই নতুন পরিস্থিতিতে বিজেপি অবশ্য সতর্ক। শুভেন্দু মন্ত্রিত্ব ছাড়ার দিন অনেক বিজেপি নেতাই তাঁকে দলে এলে স্বাগত বলে জানিয়েছিলেন। বুধবার বিজেপি সহ-সভাপতি মুকুল রায় বললেন, “শুভেন্দু এখনও তৃণমূলের বিধায়ক। বিধায়ক পদ ছাড়েনি। আমার মতামত, শুভেন্দু তৃণমূল ছেড়ে বেরিয়ে এলে স্বাগত।”