গড়বেতার কর্মসূচিতে শুভেন্দু অধিকারী— নিজস্ব চিত্র।
প্রথাগত ‘রাজনৈতিক মন্তব্য’ করলেন না। কিন্তু ঠারেঠোরে রাজনীতির কথাও বললেন শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার গড়বেতায় ক্ষুদিরাম বসুর জন্মদিবস পালন কর্মসূচিতে কোনও তথাকথিত রাজনৈতিক মন্তব্য না করলেও শুভেন্দু জনতার কাছে তাঁর ভবিষ্যতের জন্য সমর্থন চেয়ে রাখলেন। বললেন, ‘‘স্বামীজির সেই মন্ত্র ‘চরৈবেতি চরৈবেতি’ বলে এই পান্তাভাত খাওয়া, মুড়ি খাওয়া গ্রামের ছেলেটা আদর্শের জন্য লড়ছে। আদর্শের জন্য লড়বে। আপনাদের সকলের আশীর্বাদ, দোয়া প্রার্থনা করি।’’
পাশাপাশিই তিনি বলেন, ‘‘অনেকেলিখছে, আমি নাকি কমফর্ট জোনে রাজনীতি করি। এই গড়বেতায় তো ২০১১ সালের আগে আমিই সবচেয়ে বেশি আসতাম। এখন ফ্ল্যাটবাড়িতে থাকা কারও কারও অসুবিধা হচ্ছে। গ্রামের ছেলেটা রাস্তায় বেরিয়েছে!’’ পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাসদর তমলুকে ক্ষুদিরামের স্মরণসভা শেষ করে গড়বেতায় ‘শহিদ ক্ষুদিরাম বসু স্মৃতিরক্ষা কমিটি’-র কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসেছিলেন শুভেন্দু।
চন্দ্রকোণা রোড থেকে অনুগামীরা বাইক মিছিল করে তাঁকে গড়বেতায় নিয়ে যান। গড়বেতার তিন মাথার মোড়ে ক্ষুদিরামের পূর্ণাবয়ব মূর্তি উন্মোচনের পরে শুভেন্দু যান রামসুন্দর বিদ্যাভবন স্কুলের মাঠে। সেখানেই ছিল সভা।
পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু বক্তৃতা শুরু করেন ‘আমাদের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা’ বলে। তিনি বলেন, ‘‘আজকের দিনটি আমাদের কাছে ঐতিহাসিক। সকালে ২ কিলোমিটার হেঁটেছি। তমলুকের অনুষ্ঠান করে প্রায় দেড়শো কিলোমিটার গাড়িতে করে এখানে এসেছি। কেশপুরের মোহবনিতে ক্ষুদিরাম বসু যেখানে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, সেখানে পাঠাগার নির্মাণ, শীতাতপনিয়ন্ত্রিত অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা এবং কমিউনিটি হল নির্মাণের কাজে আমার সক্রিয় যোগদান ও অংশগ্রহণ ছিল। গড়বেতা শহিদ ক্ষুদিরাম বসু স্মৃতিরক্ষা কমিটি যে কোনও ধরনের উদ্যোগ নিলে বাংলার অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার ছেলে হিসেবে আমি সেখানে থাকব।’’
আরও পড়ুন: ক্ষুদিরামের জন্মদিনে ‘আত্মবলিদান’ স্মরণ শুভেন্দুর, তমলুকে মিছিল, সভা
সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় ব্রিটিশ রাজশক্তির বিরুদ্ধে ক্ষুদিরামের লড়াই এবং আত্মবলিদানের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শুভেন্দু জানান, ক্ষুদিরামের কথা নতুন প্রজন্ম জানুক। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমরা যারা দেশকে ভালবাসি, তাদেরই সেই দায়িত্ব নিতে হবে।’’
আরও পড়ুন: দক্ষিণ কলকাতায় ফের শুভেন্দুর পোস্টার, পদ ছাড়া কাজের বার্তা
আদিবাসী এবং অনগ্রসর প্রধান সম্প্রদায়ের পাশাপাশি গড়বেতায় সংখ্যালঘু জনসংখ্যাও উল্লেখযোগ্য। শুভেন্দুর বক্তৃতায় পৃথক ভাবে এসেছে তাঁদের প্রসঙ্গও। তিনি বলেছেন, ‘‘বাংলার মা-ভাই-বোনেরা, আদিবাসী বন্ধুরা, কুড়মি ভাইয়েরা, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা আমার ভালবাসা-শুভেচ্ছা, জোহার, সালাম নেবেন।’’