Suvendu Adhikari

এ মাসের মাঝামাঝি কি সিদ্ধান্ত শুভেন্দুর

পূর্ব মেদিনীপুরে শুভেন্দু-অনুগামী ব্লক সভাপতিদের দলীয় পদ থেকে অপসারণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে শনিবার থেকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:৪৮
Share:

শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র

কাঁথি, পুরুলিয়া ও কলকাতা: আগামী দিনে তিনি কী করবেন, তা নিয়ে কোনও ঘোষণা এখনও নেই। দোটানায় তাঁর অনুগামীরাও। এই আবহেই শনিবার রাতে ঘনিষ্ঠ জনা-সাতেককে নিয়ে নিজের ‘খাস তালুক’ নন্দীগ্রামে বৈঠক করলেন শুভেন্দু অধিকারী। সূত্রের খবর, চলতি মাসের মাঝামাঝি শুভেন্দু পরবর্তী রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে সেই আলোচনায় ইঙ্গিত মিলেছে।

Advertisement

অন্য দিকে পুরুলিয়ায় ‘দাদার অনুগামী’রা ‘লড়াইয়ের’ বার্তা দিয়ে পৃথক কার্যালয় খুলেছেন! সেখানে হাজির জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক, পুরসভার কাউন্সিলর-সহ দলের একাধিক পদাধিকারী।

আবার কলকাতার কয়েকটি অঞ্চলে রবিবারই মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দিয়ে ‘সততার প্রতীক’ লেখা হোর্ডিং দেখা গিয়েছে। শনিবার দলের বিরুদ্ধে ‘কটু’ মন্তব্য করার পাশাপাশি শুভেন্দুর প্রশংসা করেছিলেন তিনি। এ সবের জেরে শুভেন্দু এবং তৃণমূলে ‘বিক্ষুব্ধ’ অংশকে ঘিরে রাজনৈতিক শিবিরে জল্পনা বেড়েই চলেছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘ভারত বন্‌ধ’এর দিন ছেড়ে বুধবার রাজ্যে আসছেন বিজেপি সভাপতি নড্ডা

পূর্ব মেদিনীপুরে শুভেন্দু-অনুগামী ব্লক সভাপতিদের দলীয় পদ থেকে অপসারণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে শনিবার থেকে। সূত্রের খবর, ওই রাতেই হরিপুরে এক সভাঘরে ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শুভেন্দু। নন্দীগ্রাম-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতির পদ থেকে সদ্য অপসারিত মেঘনাদ পাল, পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ শেখ খুশনবি-সহ কয়েক জন সাংগঠনিক পদাধিকারী সেখানে ছিলেন। জানা গিয়েছে, এই সব 'আস্থাভাজন’দের ভবিষ্যতে ‘পাশে’ চেয়েছেন শুভেন্দু। সেখানেই উপস্থিত স্থানীয় নেতারা ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে শুভেন্দুর রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট হওয়ার বার্তা পেয়েছেন। মেঘনাদের দাবি, ‘‘শুভেন্দুবাবু বিধায়ক হিসেবে এলাকার মানুষের খোঁজ-খবর নিতে এসেছিলেন।’’ খুশনবির বক্তব্য, ‘‘অল্প কয়েক জনকেই ডাকা হয়েছিল। শুভেন্দু মন খুলে আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।’’

রাজনৈতিক মহলের অবশ্য পর্যবেক্ষণ, আজ, সোমবার মেদিনীপুরের সভা থেকে সম্ভবত নির্দিষ্ট বার্তা দেবেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে একান্ত ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে বসে শুভেন্দু দোলাচল কাটানোর চেষ্টা করলেন। বুঝিয়ে দিলেন, শীঘ্রই নিজের আগামী অবস্থান ঘোষণা করবেন তিনি। শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তথা কাঁথি-৩ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ কণিষ্ক পণ্ডার দাবি, ‘‘শুভেন্দু পরবর্তী কালে দক্ষিণ কলকাতার কোনও জায়গা থেকে সাংবাদিক বৈঠক করতে পারেন।’’

আরও পড়ুন: নীলবাড়ির লক্ষ্যে মমতা-মোকাবিলা, বঙ্গ বিজেপির বাছাই একাদশ

শুভেন্দুকে নিয়ে চর্চায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে পুরুলিয়া শহরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সরকারপাড়ায় ‘দাদার অনুগামী’দের নতুন কার্যালয়। সেখানে শুভেন্দুর ছবি দেওয়া ফ্লেক্সে লেখা— ‘লড়াইয়ের মাঠে দেখা হবে’। কার্যালয়ে এ দিন দুপুরে ছিলেন জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক গৌতম রায়, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিরঞ্জন মাহাতো, পুরুলিয়া পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর রবিশঙ্কর দাস, বলরামপুরের প্রাক্তন ব্লক তৃণমূল সভাপতি সুদীপ মাহাতো, মানবাজার-২ পঞ্চায়েত সমিতির-সহ সভাপতি বিকাশ মাহাতোরা।

গৌতম বলেন, ‘‘মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। দলীয় কার্যালয়ে গেলে কেউ কেউ সন্দেহের চোখে দেখছিলেন। তাই আলাদা কার্যালয়ের খুব দরকার হয়ে পড়েছিল।’’ গৌতমের দাবি, কার্যালয় খোলার জন্য ‘দাদা’র সম্মতি নেওয়া হয়েছে। জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র নবেন্দু মাহালি অবশ্য বলেন, ‘‘কোনও নেতার অনুগামীরা পৃথক কার্যালয় খুলতেই পারেন। তাঁরা কেউ তো আলাদা দলে যোগ দেননি।’’

তবে তৃণমূল ছেড়ে গিয়ে কেউই বিশেষ সুবিধা করতে পারবেন না বলে এ দিন বার্তা দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সকালে বাঁকুড়ার বড়জোড়ায় দলীয় সভায় তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলে সকলেই নেতা হয়েছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ছায়ার নীচে। সেই গাছ থেকে সরে গিয়ে দেখুক না! নেত্রী এক জনই। আর কোনও দাদা-দিদি নেই!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement