ক্যামাক স্ট্রিট থেকে হাজরা পর্যন্ত গ্রুপ-ডি চাকরিপ্রার্থীদের মিছিল বুধবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
রাজ্য সরকারের গ্রুপ-ডি চাকরিপ্রার্থীদের মিছিলে পা মিলিয়ে আরও বড় আন্দোলনের ডাক দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বুধবার ওই মিছিল শুরু হয় ক্যামাক স্ট্রিটে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসের কাছ থেকে।
ক্যামাক স্ট্রিট থেকে এই মিছিল করা নিয়ে আপত্তি ছিল কলকাতা পুলিশের। শেষে বিষয়টি কলকাতা হাই কোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। আদালতের নির্দেশেই ক্যামাক স্ট্রিট থেকে মিছিল শুরু হয়।
সেই মিছিলে যোগ দিতে আসেন শুভেন্দু। মিছিলে হাঁটেন নিজাম প্যালেস পর্যন্ত। মিছিল শেষে বলেন, ‘‘গ্রুপ-ডি-সহ যত চাকরিপ্রার্থী ময়দানে বসে আছেন, তাঁদের সঙ্গে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চকে নিয়ে নবান্ন অভিযান করতে হবে। চাকরির দাবিতে আন্দোলনরত সমস্ত সংগঠনকে নিয়ে এক লক্ষ লোকের জমায়েত করতে হবে। সেই অভিযানে আমি থাকব। দেখি ওদের কত পুলিশ, কত গুলি, কত কাঁদানে গ্যাস আছে। পরীক্ষায় পাশ করার পরেও এঁদের চাকরি না দিয়ে, সেই চাকরি বিক্রি করা হয়েছে।’’
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য নেতা তাপস রায় অবশ্য বিরোধী দলনেতাকে কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘‘দলগত ভাবে বিজেপির যে এই রকম কর্মসূচি নেওয়ার শক্তি নেই, তা প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে। এখন এই মঞ্চকে সামনে রেখে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেরকাছে ওঁরা নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে চাইছেন!’’
দুপুর আড়াইটেয় মিছিল শুরুর আগেই সেখানে আসেন কংগ্রেসের কৌস্তভ বাগচী। শুভেন্দুর সঙ্গে একই মিছিলে থাকা নিয়ে কৌস্তভ বলেন, ‘‘রাজনৈতিক পতাকা ছাড়া এই অরাজনৈতিক মিছিলে রাজ্যের মন্ত্রীরা এমনকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাঁটলেও আমি হাঁটতাম।’’
শুভেন্দু বলেন, ‘‘কৌস্তভ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে লড়ছেন। আইনজীবী হিসাবে এখানে এসেছেন। আমরা চাই, যাঁরা মমতা সরকারের বিরুদ্ধে আছেন, তাঁরাসবাই আসুক।’’
ক্যামাক স্ট্রিটে এ দিন অভিষেকের অফিসের সামনে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন ছিল। রাস্তার এক দিকে ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়েছিল। মিছিলের রুট নিয়ে আদালতের অনুমতি প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, ‘‘রাস্তা কারও বাপের জমিদারি নয়!’’
গ্রুপ-ডি চাকরিপ্রার্থী সংগঠনের আহ্বায়ক আশিস খামরুই বলেন, ‘‘আমরা মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে ৪০০ দিন ধরে বসে। মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের দাবি নিয়ে দিল্লির দরবারে গিয়েছেন। অথচ বাংলার বঞ্চিত কর্মপ্রার্থীরা বসে রয়েছে দিনের পর দিন। এই বার্তা সর্বভারতীয় স্তরে দেওয়ার জন্য ‘ইন্ডিয়া’ জোটেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই।’’
হাজরা মোড়ে এ দিন পুলিশ মিছিল আটকানোর চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে ধ্বস্তাধ্বস্তি হয় চাকরি-প্রার্থীদের। মিছিলে চাকরি-প্রার্থীদের অভিভাবকেরাও ছিলেন।