শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম ও বাঁকুড়ার ‘জমি’ ফেরাতে শুভেন্দু অধিকারীকেই ‘পূর্ণশক্তি’তে নামাতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সামনে কোনও ‘বাধা’ থাকবে না বলেও শুভেন্দুকে জানিয়ে দেওয়া হল।
এই চার জেলার ৬টি লোকসভা আসনের মধ্যে চারটিই এখন বিজেপির দখলে। শেষ লোকসভা ভোটের এই ধাক্কার পাশাপাশি আরও কিছু বিধানসভা আসনেও বিজেপি প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। এই অবস্থায় বিধানসভা ভোটের আগে এই অঞ্চলে সংগঠন সাজতে গত দু’তিন বছর ধরে নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করেছে তৃণমূল। তাতে লাভ না হওয়ায় তৃণমূল নেত্রীর পরামর্শেই আলাদা করে বৈঠক করেছেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। গত সোমবার শুভেন্দুর সঙ্গে বৈঠকে তাঁকে দলের এই ভাবনার কথা জানিয়েছেন বক্সী। দলীয় সূত্রে খবর, এই আলোচনার পরেই শুভেন্দু এই অঞ্চলে নতুন করে ‘যাতায়াত’ করবেন বলে দলীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছেন।
শুভেন্দু এই অঞ্চলের সাংগঠনিক দায়িত্ব নিয়েছিলেন লোকসভা ভোটের পরে। একাধিক কর্মসূচিতে পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম ও বাঁকুড়ায় যাতায়াতও শুরু করেছিলেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে এই জেলাগুলির সাংগঠনিক দায়িত্বে যৌথ ভাবে আরও কয়েক জন নেতাকে জুড়ে দিয়েছিল তৃণমূল। লোকসভা ভোট পর্যন্ত বাঁকুড়ার দায়িত্বে ছিলেন দলের যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানে দু’টি আসনেই হেরে গিয়েছে তৃণমূল। তাই ভোটের পরে শুভেন্দুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে এখানেও তাঁর সঙ্গে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল দলের আর এক সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। শুভেন্দু ঝাড়গ্রামের দায়িত্বে থাকাকালীন সাংগঠনিক কাজ দেখা শুরু করেছিলেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: টেস্টের অনুপাতে কোভিড পজিটিভ কেস লাফিয়ে বাড়ছে, উদ্বেগের ছবি রাজ্যে
দলীয় সূত্রে খবর, তাতেই ‘অসন্তুষ্ট’ হয়ে তিনি ধীরে ধীরে সাংগঠনিক কাজ কমিয়ে দেন। ব্যক্তিগত যোগাযোগ রক্ষা বা মন্ত্রী হিসেবে সরকারি কর্মসূচি ছাড়া সাংগঠনিক কাজে একেবারেই নিস্পৃহ ছিলেন তিনি। দুই জেলার ঘনিষ্ঠ সাংগঠনিক পদাধিকারী ও বিধায়কদের কাছে একান্তে তা জানিয়েও দিয়েছিলেন পরিবহণমন্ত্রী।
এই অবস্থায় ফের এক বার শুভেন্দুকে ‘পূর্ণশক্তি’ দিতে চাইছে তৃণমূল। সম্প্রতি দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে দুই মেদিনীপুরে সাংগঠনিক অবস্থা সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তৃণমূল নেত্রী স্বয়ং। এবং সেখানেই তিনি উল্লেখ করেন বিজেপির সঙ্গে দলের একাংশের যোগাযোগের কথাও। দলীয় সূত্রে খবর, এই সব সাংগঠনিক সমস্যা নিয়েও শুভেন্দুর সঙ্গে কথা হয়েছে দলের রাজ্য সভাপতির। তবে এ সব কাটিয়ে দলের হারানো জমি ফেরাতে শক্ত হাতেই দায়িত্ব দিতে চেয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তাতে শুভেন্দুর ‘বাধাহীন’ কাজের শর্ত মঞ্জুর করেছেন দলীয় নেতৃত্ব।