Nandigram

Suvendu Adhikari: নন্দীগ্রামে ‘তিরঙ্গা র‌্যালি’তে বাধা! ডিজি-সহ ৪ আইপিএসের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে শুভেন্দু

শুভেন্দুর দাবি, তাঁকে জব্দ করার জন্যই ‘তিরঙ্গা-যাত্রা’য় বাধা দেওয়া হয়েছিল। আইনগত সমস্যার জন্যই তা আটকানো হয়েছিল বলে পুলিশের পাল্টা দাবি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২২ ১৬:৪৪
Share:

কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি শম্পা সরকারের বেঞ্চে মামলা রুজু করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নন্দীগ্রামে ‘তিরঙ্গা র‌্যালি’তে বাধা দেওয়ার অভিযোগে আগেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে চিঠি লিখে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। এ বার রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা রুজু করলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে তিনি রাজ্য পুলিশের ডিজি-সহ চার আইপিএস আধিকারিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দুর দাবি, তাঁকে ‘জব্দ’ করার জন্যই শুক্রবার নন্দীগ্রামে ‘তিরঙ্গা র‌্যালি’তে বাধা দেওয়া হয়েছিল। যদিও আইনগত সমস্যার জন্যই শুভেন্দুর বাইক র‌্যালি আটকে দেওয়া হয়েছিল বলে পুলিশের পাল্টা দাবি।

Advertisement

বুধবার হাই কোর্টে বিচারপতি শম্পা সরকারের বেঞ্চে একাধিক আবেদন নিয়ে মামলা রুজু করেছেন শুভেন্দু। আদালতে রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালবীয়, পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অমরনাথ কে, হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শ্রদ্ধা পাণ্ডে এবং হলদিয়ার এসডিপিও রাহুল পাণ্ডের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, ওই আইপিএসদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করুক কেন্দ্র। কেন চার পুলিশকর্তাকে শো-কজ করা হবে না, মামলায় সে প্রশ্নও তুলেছেন শুভেন্দু। আগামী ২২ অগস্ট এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে বলে আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে।

বুধবার নিউ দিঘার যুব আবাস থেকে আয়োজিত ‘তিরঙ্গা র‌্যালি’তে যোগ এসেছিলেন শুভেন্দু। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামে জাতীয় পতাকা হাতে স্থানীয় মানুষদের নিয়ে সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত কর্মসূচি ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ যাত্রায় বাধা দিয়েছিল পুলিশ। তার বিরুদ্ধে রাজ্যের ডিজি মনোজ মালবীয়, পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অমরনাথ কে, হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিস সুপার শ্রদ্ধা পাণ্ডে এবং হলদিয়ার এসডিপিও রাহুল পাণ্ডের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করা হয়েছে।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শ্রদ্ধা পাণ্ডের নেতৃত্বে পুলিশ সুপার অমরনাথ কে-র নির্দেশে রাজ্যের ডিজি অমিত মালবীয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলে রাষ্ট্রবাদী জনগণের মিছিলকে আটকেছে।”

Advertisement

স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষ পূর্তিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আহ্বানে ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ কর্মসূচি সফল করতে শুক্রবার পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের তেখালি থেকে মোটরবাইক মিছিলের আয়োজন করেছিলেন শুভেন্দু। তবে সে দিন অর্থাৎ ১২ অগস্ট সকাল ১০টা নাগাদ শুভেন্দু মিছিল শুরু করার আগেই হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শ্রদ্ধা পাণ্ডের নেতৃত্বে শতাধিক পুলিশের একটি দল হাজির হয় গোকুলনগরের তেখালি সংলগ্ন এলাকায়। ধীরে ধীরে সেখানে জমায়েত বাড়তে থাকে শুভেন্দুর অনুগামীদের। এর পর শুভেন্দু এসে বাইক মিছিল শুরু করার উদ্যোগ নিতেই পথ আটকে দাঁড়ায় পুলিশ। শ্রদ্ধার সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান শুভেন্দু। তবে হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্পষ্ট জানিয়ে দেন, হেঁটে যেতে চাইলে মিছিল হবে, কিন্তু অনুমোদন না থাকায় বাইকমিছিল করা যাবে না। কর্মসূচিটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক দাবি করে শুভেন্দু জানিয়েছিলেন, তেখালি থেকে রেয়াপাড়া প্রায় ১৮ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে যাওয়া অসম্ভব। শেষ পর্যন্ত পুলিশি বাধায় সেখানেই মিছিল বন্ধ করেন শুভেন্দু।

গোটা ঘটনা নিয়ে শাহের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান শুভেন্দু। পরে শুভেন্দুকে ফোন করে ঘটনার খোঁজখবর নেন শাহ। সে দিনই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে হুমকি দিয়েছিলেন শুভেন্দু। এ বার হাই কোর্টে মামলাও রুজু করলেন তিনি। শুভেন্দুর দাবি, ‘‘আমি পুলিশকে অনুরোধ করেছিলাম, তেখালি থেকে রেয়াপাড়া প্রায় ১৮ কিলোমিটার রাস্তা বাইকে চড়ে যাব। এই রাস্তা হেঁটে যাওয়ার মতো নয়। কিন্তু আমাকে জব্দ করার জন্য এই মিছিলের পথ আটকে দেওয়া হল।” তিনি বলেন, ‘‘গোটা ভারত জুড়ে সমস্ত বাড়িতে যাতে তিরঙ্গা ঝান্ডা ওড়ে, সে জন্য সমস্ত বিধায়কদের নিজের এলাকায় প্রচার করার কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। আমি নন্দীগ্রামের নির্বাচিত প্রতিনিধি। কত নিকৃষ্ট হলে জাতীয় পতাকা হাতে সেই কর্মসূচিকে রুখে দেওয়া হয়। আমি যদি জোর করে এগোতে চাই তাহলে হয়তো পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি হত, অনেকেই আহত হতেন।’’ তাঁর দাবি, ‘‘নন্দীগ্রামে ১,৯৫৬ ভোটে (মমতার) হারার অব্যক্ত যন্ত্রণা রয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যত দিন বাঁচবেন, এই যন্ত্রণা বয়ে বেড়াতে হবে। সেই জ্বালা মেটাতেই আমার পথ আটকে দেওয়া হয়।” যদিও শুভেন্দুর দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান। আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে সুফিয়ান বলেন, ‘‘এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আইনের শাসনকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেন। বিরোধী দলনেতা যে মিছিলের কথা বলছেন, তার কোনও অনুমতি তিনি নেননি। তাই প্রশাসন সে দিন মিছিল করতে দেয়নি। এবং বিরোধী দলনেতা যে ভোটের ফলাফলের কথা বলছেন, তা আদালতে বিচারাধীন। আদালতের রায়েই বোঝা যাবে নন্দীগ্রামে কে জিতেছিল, কে হেরেছিল!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement