শুভেন্দু অধিকারী। — ফাইল চিত্র।
ইডি-র হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (ডাকনাম বালু) অভিযোগ করেন, এ সবের নেপথ্যে রয়েছে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ‘ষড়যন্ত্র’। জ্যোতিপ্রিয়ের সেই অভিযোগের পাল্টা দিতে শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে নানা তথ্য তুলে ধরলেন শুভেন্দু। তিনি দাবি করলেন, একাধিক ‘ভুয়ো’ সংস্থা গঠন করে প্রায় ৯৫ কোটি কালো টাকা সাদা করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়।
শুক্রবার শুভেন্দু দাবি করেছেন, অভিষেক চোখানি নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ‘ভুয়ো’ সংস্থা কেনা হয়েছিল। সেগুলির মালিকানা ছিল জ্যোতিপ্রিয়ের পরিবারের সদস্যদের হাতে। গ্রেশাস ক্রিয়েশন প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি সংস্থার শেয়ার ছিল মন্ত্রীর স্ত্রী মণিদীপা মল্লিকের কাছে। অন্য দুই ‘ভুয়ো’ সংস্থার মালিকানাও ছিল মল্লিক পরিবারের সদস্যদের হাতে।
জ্যোতিপ্রিয়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের হাতেও কয়েকটি ‘ভুয়ো’ সংস্থার মালিকানা ছিল বলে দাবি করেছেন শুভেন্দু। যাঁদের মধ্যে অন্যতম বাকিবুর রহমান, যিনি ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন ইডিরই হাতে। শুভেন্দু দাবি করেছেন, বাকিবুর এবং তাঁর ৬১ কোটি টাকার সংস্থার মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করা হত। পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম (পিডিএস)-এর দুর্নীতির মাধ্যমেও টাকা রোজগার করেছিলেন তিনি। সুলভ দামে খাদ্যশস্য বিলি করা হয়ে এই ব্যবস্থার মাধ্যমে। শুভেন্দুর দাবি, এই বিলিব্যবস্থার মাধ্যমেও দু্র্নীতিতে জড়িয়েছিলেন বাকিবুর। এখানেই থামেননি শুভেন্দু। তাঁর অভিযোগ, ছবি প্রযোজনা সংস্থা রয়েছে বাকিবুরের। শুভেন্দুর অভিযোগ, বাকিবুর জ্যোতিপ্রিয়কে ‘মহিলা জোগান’ দিতেন। কলকাতা এবং বেঙ্গালুরুতে তাঁর হোটেলও রয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধী দলনেতার।
জ্যোতিপ্রিয়ের আর এক সহযোগী কালী দাসের গুদামে বিলির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানো রেশন ‘বেআইনি ভাবে’ মজুত করা হত। সম্প্রতি স্থানীয়েরা তার হদিস পান। শুভেন্দু আরও জানিয়েছেন, জ্যোতিপ্রিয়ের ‘প্রধান দালাল’ মহেন্দ্র আগরওয়াল। তিনি মন্ত্রীর ‘কালো টাকা’ নির্মাণ শিল্পে বিনিয়োগ করতেন। শুভেন্দুর অভিযোগ, বেশ কিছু ময়দার কারখানার মাধ্যমেও দুর্নীতি হয়েছে।
জ্যোতিপ্রিয়ের মেয়ে প্রিয়দর্শিনী মল্লিকের বিরুদ্ধেও আঙুল তুলেছেন শুভেন্দু। তাঁর দাবি, ২০১৬ সালে নোটবন্দির সময় ব্যাঙ্কে নগদে ৩ কোটি ৩৬ লক্ষ ৬৭ হাজা ৪৯৩ টাকা জমা করেছিলেন প্রিয়দর্শিনী। দাবি করেছিলেন, ওই টাকা বেতন বাবদ পেয়েছিলেন তিনি। ওই অর্থবর্ষে কলেজের শিক্ষক হিসাবে তিনি পেয়েছিলেন ২ লক্ষ ৪৮ হাজার ৩৬ টাকা। তাঁর স্ত্রীও আইটিবিআই ব্যাঙ্কে নগদ ৪ কোটি ২৯ লক্ষ ২০ হাজার ২১১ টাকা জমা করেছিলেন। তাঁর আরও দাবি, প্রতি বছর জ্যোতিপ্রিয়ের স্ত্রী এবং মেয়ের বিশাল অঙ্কের আয় দেখানো হয়েছে, যেখানে অন্য কোনও পেশার সঙ্গে জড়িত নন তাঁরা।