শুভেন্দু অধিকারী এবং কুণাল ঘোষ। নিজস্ব চিত্র।
পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার বিস্ফোরণকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত কৃষ্ণপদ বাগ ওরফে ভানুকে প্রথম থেকেই তৃণমূলের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে দাবি করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার ওড়িশার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেই ভানুর মৃত্যুতে আবারও শাসকদলকে কটাক্ষ করলেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর দাবি, ভানুর মৃত্যুতে তৃণমূলের বড় ক্ষতি হয়ে গেল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি ‘সমবেদনা’ জানিয়ে শুভেন্দুর মত, তথ্য সংস্কৃতি বিভাগ থেকে শোকবার্তা প্রকাশ করা উচিত! বিরোধী দলনেতাকে পাল্টা আক্রমণ করে ভানুকে ‘অধিকারী প্রাইভেট লিমিটেডের কর্মচারী’ বলে দাবি করেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
এগরায় মঙ্গলবার বিস্ফোরণের ঘটনার পর অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় ওড়িশায় পালিয়ে গিয়েছিলেন মূল অভিযুক্ত কৃষ্ণপদ বাগ ওরফে ভানু। তাঁকে পড়শি রাজ্যের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। ওড়িশা পুলিশের কাছ থেকে সেই খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে সেখানে পৌঁছেও গিয়েছিলেন সিআইডির আধিকারিকেরা। গ্রেফতারও করা হয় ভানুকে। কিন্তু মধ্যরাতে মৃত্যু হয় তাঁর। এ প্রসঙ্গে শুক্রবার কালিয়াগঞ্জ যাওয়ার পথে বাগডোগরা বিমানবন্দরে বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। কিন্তু এ ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আমি সমবেদনা জানাব। তাঁর এক অমূল্য সম্পদ চলে গেলেন। এতে তৃণমূলের বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল। এই ক্ষতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী ভাবে পূরণ করবে, সেটা ভবিষ্যতই বলবে। তথ্য সংস্কৃতি বিভাগ থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শোকবার্তা দেওয়া উচিত ছিল।’’
শুরু থেকেই বিরোধীদের দাবি ছিল, ভানু এলাকার সক্রিয় তৃণমূলকর্মী। শুভেন্দু টুইটে দাবি করেছিলেন, এগরা থানার পুলিশের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন করেই এই বেআইনি কারবার চালাতেন ভানু। এই মন্তব্য নিয়ে জল্পনার আবহে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘তৃণমূলের লোক হলে বাংলার পুলিশ তাঁকে গত বছর কালীপুজোর সময় বেআইনি বাজি কারখানার জন্য কেন গ্রেফতার করবে?’’ যে পঞ্চায়েত এলাকায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, তা বিজেপির দখলে বলে জানিয়ে মমতা আরও বলেন, ‘‘ওদেরই তথ্য রাখা উচিত ছিল। চোরের মায়ের বড় গলা মানুষ হন, তার পর নেতা হবেন।’’
শুক্রবার শুভেন্দুর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কুণাল দাবি করেন, ‘‘ওই এলাকাটা বিজেপির পঞ্চায়েতে রূপান্তরিত হয়েছে। আমাদের আফসোস, ভানু মারা যাওয়ায় শুভেন্দু এবং তাঁর কিছু সাঙ্গপাঙ্গ বেঁচে গেল। ভানু বেঁচে থাকলে বয়ানে ওঁদের নামই বেরোত।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এই যে ভানুর নাম শোনা যাচ্ছে, সে অতীতে ওখানে বাম শিবিরে ছিল। পরবর্তী কালে অধিকারী প্রাইভেট লিমিটেডের কাছাকাছি এসে তাদের সৌজন্যে তৃণমূলে আসে। পরে আবার তাদের অনুগামী হয়ে বিজেপিতে চলে যায়। অধিকারি প্রাইভেট লিমিটেডের কর্মচারী ছিলেন ভানু।’’