বিধায়ক কার্যালয়ে পুলিশি হানাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে অভিযোগ করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর সেই অভিযোগকেই মান্যতা দিলেন রাজ্যপাল। নিজস্ব চিত্র
নন্দীগ্রামের বিধায়কের অফিসে পুলিশি হানার ঘটনাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে অভিযোগ করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় টুইট করে সেই অভিযোগকেই মান্যতা দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এদিন সকাল ১১টায় এ বিষয়ে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর রিপোর্ট দেওয়ার কথা ছিল রাজভবনে। মুখ্যসচিব রাজ্যপালের কাছে না গেলেও, রিপোর্ট পাঠানো হয়। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপারের রিপোর্টই পাঠানো হয় রাজভবনে।
সন্ধ্যায় টুইট করে নিজের বিবৃতির সঙ্গে পুলিশ সুপারের রিপোর্টটিও টুইট করে দেন রাজ্যপাল। তিনি লেখেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব ২৩ মে সকাল ১১টায় রাজভবনে আসবেন। প্রাথমিক তদন্ত সাপেক্ষে যে রিপোর্ট এসেছে তা উদ্বেগজনক। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তাঁর অফিসে ‘পুলিশি অনুপ্রবেশ’কে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে যে অভিযোগ করেছিলেন, তা বিশ্বাসযোগ্য বলেই মনে হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, রবিবার নিজের টুইটার হ্যান্ডলে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন ধনখড়। নন্দীগ্রামের বিধায়ক অফিসে পুলিশি অভিযানের ভিডিয়ো পোস্ট করে রাজ্যপাল লেখেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতার নন্দীগ্রামের কার্যালয়ে পুলিশ হানা দিয়েছে। বিষয়টি উদ্বেগের, তাই আমি মুখ্যসচিবের কাছে এ বিষয়ে জবাব চেয়েছি।’ বিরোধী দলনেতাও অভিযোগের সুরে টুইট করেন পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের বিরুদ্ধে। তিনি লেখেন, ‘আগে থেকে না জানিয়ে, কোনও সার্চ ওয়ারেন্ট ছাড়াই এবং ম্যাজিস্ট্রেটের অনুপস্থিতিতে, আচমকা মমতার পুলিশ (পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ) আমার নন্দীগ্রামের বিধায়ক কার্যালয়ে অনধিকার প্রবেশ করেছে।মমতার সরকারের পুলিশের এই জঘন্য অপব্যবহার বিরোধী দলনেতার প্রতি এক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের প্রমাণ।’
পরে শুভেন্দু এই ঘটনাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলেও অভিযোগ করেন। যদিও, পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অমরনাথ কে. বলেছিলেন, ‘‘নন্দীগ্রামের এক রাজনৈতিক নেতার স্ত্রী ভুয়ো কাগজের ভিত্তিতে একটি কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কে চাকরি করছেন— এই সংক্রান্ত অভিযোগ জমা হয় পুলিশের কাছে। সেই মামলার তদন্ত চলাকালীন পুলিশের কাছে অভিযোগ আসে কয়েকজন এই মামলার অভিযোগকারীদের হুমকি দিচ্ছেন। যাঁরা হুমকি দিচ্ছেন তাঁদের ধরতে গ্রামে অভিযান চালানো হয়। ওই অভিযুক্তরা নন্দীগ্রামের ওই বাড়িতে এসে গা ঢাকা দেন। আমরা নির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ওই বাড়িতে অভিযান চালাই। সেই সময় ওই বাড়িতে ছিলেন অনুপম দত্ত নামের এক ব্যক্তি। তাঁকে আমরা ঘরগুলি খুলে দিতে বলি। উনি তিনটে ঘর খুলে দেখান। তবে সব ঘর আমাদের দেখতে দেওয়া হয়নি। গোটা ঘটনার ভিডিয়োগ্রাফি রয়েছে। কেউ দেখতে চাইলে তাঁরা পুলিশের কাছে এসে সেই ভিডিয়ো দেখতেই পারেন। তবে অভিযুক্তদের না পেয়ে পুলিশ কিছু সময় পরেই ফিরে আসে।’’
এরপরেই রাজ্যপাল এ বিষয়ে মুখ্যসচিবের রিপোর্ট তলব করেন। মঙ্গলবার সেই রিপোর্ট রাজভবন পৌঁছলে, শুভেন্দুর অভিযোগকেই মান্যতা দেন তিনি। তবে আগামী ২৩ মে রাজভবন যাবেন মুখ্যসচিব। সেইদিনও রাজ্যপালের পদক্ষেপের উপর নজর থাকবে বাংলার রাজনীতির কারবারিদের।