ফাইল চিত্র।
নারদ স্টিং অপারেশনের সময় তিনি ছিলেন বর্ধমানের পুলিশ সুপার। ওই মামলায় নাম জড়িয়ে যাওয়ায় তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়। এখনও সাসপেনশনে থাকা সেই পুলিশকর্তা এসএমএইচ মির্জা জানতে চান, নারদ কাণ্ডে বাকি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) কী পদক্ষেপ করতে চলেছে? নিছক প্রশ্ন তোলা নয়, এর উত্তর জানতে চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। আদালত সূত্রের খবর, পুলিশকর্তার ওই আবেদন গ্রহণ করেছেন বিচারক। তদন্ত কোন পর্যায়ে রয়েছে, তিনি তা জানতে চেয়েছেন ইডি-র কাছে।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, নারদ স্টিং অপারেশন কাণ্ডে মোট ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তদন্তে নেমেছিল সিবিআই এবং ইডি। এখন ১১ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, বর্তমান মেয়র ফিরহাদ (ববি) হাকিম, প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, প্রয়াত সাংসদ সুলতান আহমেদ, সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার, সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ সৌগত রায়, সাংসদ অপরূপা পোদ্দার, প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্র, প্রাক্তন পুরকর্তা ইকবাল আহমেদ, প্রাক্তন সাংসদ মুকুল রায় এবং পুলিশকর্তা মির্জার নাম ছিল অভিযুক্তের তালিকায়। মৃত্যুর পরে এই তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে সুলতান আহমেদ ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের নাম।
নারদ কাণ্ডে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে মির্জাকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। ৫০ দিনের বেশি জেল হেফাজতে ছিলেন মির্জা। ২০২১ সালের ১৭ মে সুব্রতবাবু, ফিরহাদ, মদনবাবু ও শোভনবাবুকে গ্রেফতার করে সিবিআই। পরে জামিন পান তাঁরা। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে শোভনবাবু, মদনবাবু, সুব্রতবাবু, ফিরহাদ ও মির্জাকে অভিযুক্ত দেখিয়ে বিচার ভবনে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে চার্জশিট (‘কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট’) পেশ করে ইডি। নভেম্বরে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন অভিযুক্তেরা।
মির্জার দাবি, পাঁচ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হল। অথচ তালিকায় থাকা বাকি ছ’জনের বিরুদ্ধে কিছু বলা হল না। তাই বাকি অভিযুক্তদের বিষয়ে তদন্তকারী সংস্থা কী পদক্ষেপ করতে চলেছে, আদালতের কাছে তা জানতে চেয়েছেন তিনি।
ইডি-র আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র আদালতে জানান, বাকি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এখনও তদন্ত চলছে। বিচারক তদন্তের সমস্ত নথি আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে আদালত সূত্রের খবর। সেই নির্দেশের পরেই সম্প্রতি তদন্তের নথি ইডির তরফে আদালতে জমা দেওয়া হয়। বিশাল সেই নথি নতুন সুটকেসে ভরে তালাবন্ধ করে জমা দেওয়া হয়েছে আদালতে। বিচারক তা পর্যবেক্ষণ করবেন বলে জানা গিয়েছে। মির্জার আবেদনের ভিত্তিতে আগামী ১ নভেম্বর শুনানি হওয়ার কথা।