কান্নায় ভেঙে পড়েছেন অভিযুক্তের মা। নিজস্ব চিত্র।
মা অন্ত প্রাণ ছিল বাবু। ওর ভাল নাম সুশান্ত। ডাকনাম রাজেশ। কিন্তু আমি ওকে বরাবর বাবু বলেই ডাকতাম। ওর বাবার সঙ্গে আমার কথা কাটাকাটি হলে সব সময়ই আমার পাশে দাঁড়াত। তেমন হলে বাবার সঙ্গে ঝগড়াও করত। অথচ সেই ছেলে গত কয়েক মাসে বদলে গিয়েছিল। আমি যেন ওর চোখে বিষ হয়ে উঠেছিলাম। এক দিন আমার দিকে হাঁসুয়া নিয়ে তেড়ে গিয়েছিল।
ছেলেকে দেখে আমারও কষ্ট হত। ঘরের মধ্যে চুপ করে বসে থাকত ছেলেটা। বাড়িতে কারও সঙ্গে কথা বলত না। দিনের পর দিন স্নানও করত না। খাওয়াদাওয়া কমিয়ে দিয়েছিল। আমি খেতে বললে রেগে যেত। স্নান করার কথা বললে মেজাজ দেখিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেত।
আমি ওকে বলেছিলাম, প্রেম ভেঙে গিয়েছে তো কী! মন খারাপ করিস না। নিজের পায়ে দাঁড়া, আমি মেয়ে দেখে তোর বিয়ে দেব। শুনে খুব রাগারাগি করল। অথচ দেখুন, এর আগে তো ও সব সময়ে হাসিখুশি থাকত। ইংরেজবাজার শহরের এয়ারভিউ কমপ্লেক্সে পিসির বাড়ি। সেখানে থেকে যখন গ্রামের বাড়িতে আসত, বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলো করত। গ্রামে কারও সঙ্গে কোনও দিন গোলমাল করেনি। ওর খুব ইচ্ছে ছিল পুলিশ হওয়ার।
সেই ছেলেই কিনা মেয়েটাকে শেষ করে দিল! ভিডিয়োতে সবাই নাকি দেখেছে। আমার ওই ভিডিয়ো দেখার সাহস হয়নি। ছেলেটা নিজের জীবনও তো শেষ করে দিল। সবাই বলছে তার নাকি ফাঁসি হবে। মানুষের কথা কানে ধারালো অস্ত্রের মতো বিঁধছে। ভাত তো দূরের কথা, গলা দিয়ে জলও নামছে না।