Covid-19

দুর্বল নেট-যোগ অনলাইন পাঠের বড় বাধা: সমীক্ষা

করোনার প্রাদুর্ভাবে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করেছে। এই ধরনের পাঁচটি কলেজের ২০৮৮ জন পড়ুয়ার মধ্যে সমীক্ষা চালিয়েছে অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব হাইজিন অ্যান্ড পাবলিক হেল্থ। বর্তমান পরিস্থিতিতে অনলাইন পঠনপাঠনে পড়ুয়ারা কতটা লাভবান হচ্ছেন, সেই বিষয়ে জোর বিতর্ক চল

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২০ ০৬:১৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

সামর্থ্য, সুযোগ ও পরিকাঠামোর অভাবে রাজ্যের বহু গ্রাম ও প্রত্যন্তের অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী অনলাইন-পাঠ থেকে বঞ্চিত তো হচ্ছেনই। এমনকি কলকাতা এবং তার সংলগ্ন হাওড়া, হুগলি ও উত্তর ২৪ পরগনায় সমীক্ষা চালিয়ে দেখা যাচ্ছে, অনলাইন ক্লাসে পড়ুয়াদের একটি বড় অংশের প্রধান বাধা দুর্বল ইন্টারনেট সংযোগ।

Advertisement

করোনার প্রাদুর্ভাবে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করেছে। এই ধরনের পাঁচটি কলেজের ২০৮৮ জন পড়ুয়ার মধ্যে সমীক্ষা চালিয়েছে অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব হাইজিন অ্যান্ড পাবলিক হেল্থ। বর্তমান পরিস্থিতিতে অনলাইন পঠনপাঠনে পড়ুয়ারা কতটা লাভবান হচ্ছেন, সেই বিষয়ে জোর বিতর্ক চলছে। কলকাতার মৌলানা আজাদ কলেজ, সেন্ট পলস কলেজ, উইমেন্স খ্রিস্টান কলেজ, উত্তর ২৪ পরগনার বাণীপুর মহিলা মহাবিদ্যালয়, হাওড়ার বিজয়কৃষ্ণ গার্লস কলেজের পড়ুয়াদের মধ্যে চালানো সমীক্ষা বলছে, অনলাইন-পাঠে দ্রুত গতির ইন্টারনেট সংযোগের অভাবই সব থেকে বড় সমস্যা। ৭৮% পড়ুয়ার দ্রুত ইন্টারনেট সংযোগই নেই। ইন্টারনেটের ডেটা কার্ড কেনার টাকা নেই ১৪% পড়ুয়ার। ৯% ছাত্রছাত্রী অনলাইনে পড়াশোনার তাগিদ অনুভব করেন না। নেটে পড়ার বিষয়টি ঠিক গুছিয়ে করতে পারেন না ৮% পড়ুয়া। ডিজিটাল-সাক্ষরতা নেই ৬% পড়ুয়ার। অনলাইন পঠনপাঠনের ক্ষেত্রে ৯৪% ছাত্রছাত্রীর স্মার্টফোনই একমাত্র ভরসা। ৫২% পড়ুয়া অনলাইন-পড়াশোনায় খুশি নয়। পাঠ্যক্রম শেষ হবে কি না, তা নিয়ে খুবই চিন্তিত ৭৪%। ১১% পড়ুয়ার তেমন চিন্তা নেই। যাঁদের পারিবারিক আর্থিক পরিস্থিতি খারাপ, তাঁদের মধ্যে চিন্তায় রয়েছেন ৬০%। যাঁদের পরিবারের অর্থবল রয়েছে, তাঁরা তুলনায় কম চিন্তায় রয়েছেন।

সমীক্ষক প্রতিষ্ঠানের ডিরেক্টর-প্রফেসর বন্দনা সেন বলেন, ‘‘১৫ থেকে ৩১ মে অনলাইনে এই সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। যদি মাঝখানে আমপানের হামলা না-হত, তা হলে আরও অনেক বেশি ছাত্রছাত্রীর মধ্যে সমীক্ষা করা যেত। ওই ঘূর্ণিঝড়ের জন্য কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল।’’

Advertisement

শহর ও শহরতলির যে-সব পড়ুয়া সমীক্ষার আওতায় ছিলেন, তাঁদের এক-তৃতীয়াংশের সংসার চলে নিয়মিত বেতনে। ৪৫% পরিবারের ব্যবসা আছে। ১২% পরিবার শ্রমজীবী। তাদের মধ্যে ৬৪.৪% রোজগার নিয়ে সমস্যায় রয়েছে। রোজগার না-থাকায় সমস্যায় পড়েছে ৮৭% শ্রমজীবী পরিবার। ৭৫০০ টাকা বা তার থেকেও কম রোজগার, এমন ৮১% পরিবারে সমস্যা তীব্র। যে-সব পরিবারের ভরসা ব্যবসা, এই সময়ে তাদের ৪২% শতাংশের কোনও রোজগার নেই। কিছু কিছু উপার্জন হচ্ছে ১৮% পরিবারের। নিয়মিত বেতনভোগী পরিবারের মধ্যে ১০% চাকরি হারিয়েছে। তাদের মধ্যে ৯০% নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার। চাকরি রয়েছে, কিন্তু বেতন হচ্ছে না ১৩% পরিবারে। চাকরি থাকলেও ১৭% পরিবারে বেতন কম মিলছে। এর ফলে আর্থিক সমস্যায় পড়েছে ২৬% পরিবার। তিন বেলা খাবার জুটছে না এই ধরনের ১৯% পরিবারে। এই পরিস্থিতিতে অনলাইনে-পাঠের সমস্যা যে খুবই প্রকট, তা উঠে এসেছে সমীক্ষায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement