সুপ্রিম কোর্টে শুনানি চলছে। ছবি: পিটিআই
বিরতির পর দুপুর ২টো থেকে ফের আরজি কর মামলার শুনানি শুরু হবে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে।
রাজ্যের তরফে আদালতে জানানো হয়, আর্জি কর-কাণ্ডে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে। কিন্তু কেস ডায়েরি উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, “এখানে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, রাত ১১টা ৩০ মিনিটে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের হয়েছিল।”
বিচারপতি পারদিওয়ালা বলেন, “পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারিন্টেন্ডেন্ট কে? তদন্তে তাঁর ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এমন ভাবে তদন্ত হল?”
বিচারপতি পারদিওয়ালা জানতে চান, কখন ময়নাতদন্ত হল? রাজ্য জানায়, সন্ধ্যা ৬টা ১০ থেকে ৭টা ১০-এর মধ্যে। বিচারপতি পারদিওয়ালা রাজ্যের কাছে জানতে চান, অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা কখন দায়ের করা হয়? রাজ্য জানায়, দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের হয়েছিল। বিচারপতি পারদিওয়ালা বলেন, “এটা কি অস্বাভাবিক মৃত্যু? যদি হয়, তবে ময়নাতদন্তের কী প্রয়োজন ছিল? এখানে দেখতে পাচ্ছি রাত সাড়ে ১১টায় জেনারেল ডায়েরি হয়। তার ১৫ মিনিটের মাথায় এফআইআর হল? আদালতের কাছে সঠিক ভাবে বক্তব্য রাখুন।” বিচারপতি পারদিওয়ালা আরও বলেন, “অবাক হচ্ছি, ময়নাতদন্তের আগেই বলে দেওয়া হল অস্বাভাবিক মৃত্যু?”
প্রধান বিচারপতি বলেন, “একটা জিনিস নিয়ে খটকা লাগছে। সকাল ১০টা ১০ মিনিট নাগাদ টালা থানা অভিযোগ দায়ের করল। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ঘটনাস্থল সিল করল পুলিশ? এত ক্ষণ সেখানে কী হয়েছিল?” রাজ্যের তরফে বলা হয়, বিষয়টি এমন নয়। সব কিছুর ভিডিয়োগ্রাফি রয়েছে। সলিসিটর জেনারেল বলেন, “রাজ্য বলছে মৃতার বাবা এফআইআর দায়ের করার অনুমতি দেননি।”
সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, “প্রথমে পরিবারকে বলা হয় আত্মহত্যা। পরে বলা হয় মৃত্যু। তখন সন্দেহ তৈরি হতে তার পর থেকে ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়।” তার পরেই প্রধান বিচারপতি ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখতে চান।
সলিসিটর জেনারেল বলেন, “সবচেয়ে অবাক করেছে, চিকিৎসকের দেহ সৎকারের পরে রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে এফআইআর করা হয়েছে।” রাজ্য আদালতে জানায়, কী কী হয়েছে, প্রতি মিনিটের টাইমলাইন তাদের কাছে রয়েছে।
শীর্ষ আদালতে কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তাঁর সওয়ালে বলেন, “ঘটনার পাঁচ দিনের মাথায় সিবিআই প্রবেশ করেছে। সব কিছু বদলে গিয়েছে।” পাল্টা রাজ্যের তরফে বলা হয়, “কিছু বদলে যায়নি। সব কিছুর ভিডিয়োগ্রাফি রয়েছে।”
আরজি কর-কাণ্ডে অভিযুক্তের মেডিক্যাল রিপোর্ট কোথায়, সিবিআইয়ের কাছে জানতে চাইলেন প্রধান বিচারপতি। জবাবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি জানায়, রাজ্য তাদের হাতে এটা দেয়নি। রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল জানান, কেস ডায়েরির মধ্যে সব রয়েছে।
সিবিআই এবং রাজ্যের জমা দেওয়া রিপোর্ট পড়ছেন সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতি। রিপোর্টগুলি নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন তাঁরা।
কর্মবিরতি ছেড়ে চিকিৎসকদের কাজে ফিরতে বললেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়।
তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিল সুপ্রিম কোর্টে জমা দিল সিবিআই। প্রধান বিচারপতি বলেন, “প্রথমে আমরা তদন্তের রিপোর্ট দেখব। তার পরে রাজ্যের গঠিত সিট নিয়ে আদালত বিবেচনা করবে।” আরজি করে ভাঙচুরের ঘটনায় শীর্ষ আদালতে রিপোর্ট জমা দিল রাজ্যও।
ছাত্রদের অভিযোগ শুনে প্রধান বিচারপতি বলেন, “কে এমন করছেন? তাঁর নাম আমাদের দিন।” চিকিৎসকদের আইনজীবী আদালতে বলেন, “রাজ্য এমন একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছে, যাতে তাদের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
আরজি কর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবারের সুপ্রিম কোর্টে এমনই অভিযোগ করলেন আরজি করের আন্দোলনরত চিকিৎসকেরা। চিকিৎসকদের আইনজীবী বলেন, “হাসপাতালে এখনও ভয়ের পরিবেশ রয়েছে।”
আরজি কর মামলার শুনানির জন্য বসল প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ। প্রধান বিচারপতি ছাড়াও এই বেঞ্চের বাকি দুই সদস্য হলেন বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্র।
গত সোমবারের শুনানিতে আরজি কর হাসপাতাল ভাঙচুরের ঘটনায় কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা নিয়েও বৃহস্পতিবার রাজ্যকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
গত সোমবারের শুনানিতে আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় সিবিআইয়ের কাছে তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত স্টেটাস রিপোর্ট চেয়েছিল শীর্ষ আদালত। ওই ঘটনায় তদন্ত কোন পর্যায়ে রয়েছে, কতটা এগিয়েছে তা জানতে চেয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।