Supreme Court

১২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে মান্যতা দিল সুপ্রিম কোর্ট

প্রাথমিকে ২০২২ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, সোমবার সুপ্রিম কোর্ট তাতেই মান্যতা দিল। চাকরিপার্থীরা জানালেন, এর ফলে নিয়োগ নিয়ে জট কেটে গিয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১৪:৫৪
Share:

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।

প্রাথমিকের ২০২২ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নিল সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্ট জানাল, নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবে রাজ্য। প্যানেল প্রকাশেও বাধা তুলে নিল বিচারপতি হিমা কোহলি, বিচারপতি আসানুদ্দিন আমানুল্লাহের বেঞ্চ। সর্বোচ্চ আদালত জানায়, ১১,৭৫৮ শূন্যপদের মধ্যে ৯৫৩৩ পদে শিক্ষক নিয়োগ করা যাবে। এ নিয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশকেও মান্যতা দিয়েছে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ২০২০-২২ শিক্ষাবর্ষের ডিএলএড প্রশিক্ষণরতদের ইন্টারভিউ এবং অ্যাপটিটিউড টেস্ট নিতে সম্পূর্ন করতে হবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে। তবে তাঁদের প্যানেল এখনই প্রকাশ করা যাবে না। ৯৫৩৩ জনকে নিয়োগের পরে বকেয়া শূন্যপদ খালি রাখতে হবে। আদালতের চূড়ান্ত নির্দেশের উপর তাঁদের নিয়োগ নির্ভর করবে। ডিএলএডদের বিষয়টি নিয়ে আগামী ২২ মার্চ পরবর্তী শুনানি হবে।

Advertisement

২০২২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ১১,৭৫৮ পদে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় পর্ষদ। সেই সময় প্রথম বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তারা জানায়, যাঁরা চলতি শিক্ষাবর্ষে ডিএলএডের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন, তাঁরাও নিয়োগে অংশ নিতে পারবেন। পর্ষদের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে মামলা দায়ের হয়। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় পর্ষদের সিদ্ধান্তেই মান্যতা দেন। বিচারপতি পর্যবেক্ষণ ছিল, ২০২০-২২ শিক্ষাবর্ষের প্রার্থীদের কোর্স শুরু হয়েছে ২০২০ সালের জুন মাসে। তাঁদের দু’বছরের কোর্স সম্পূর্ণ হবে ২০২২ সালের জুন মাসে। অর্থাৎ, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ সালে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিনের আগেই তাঁদের সকলের চূড়ান্ত সেমিস্টারের পরীক্ষা হয়ে যাবে। তাই ওই শিক্ষাবর্ষের প্রশিক্ষণরত প্রার্থীদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার অধিকার রয়েছে। তবে ওই প্রার্থীদের নিয়োগপত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে সিঙ্গল বেঞ্চ নির্দিষ্ট করে কোনও নির্দেশ দেয়নি।

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের ওই নির্দেশ এবং পর্ষদের বিজ্ঞপ্তি খারিজ করে দেয় হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। গত বছর এপ্রিলে রায় ঘোষণা করে ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, জাতীয় শিক্ষক শিক্ষণ পর্ষদ (এনসিটিই)-এর নিয়ম অনুয়াযী, শিক্ষক হতে গেলে ন্যূনতম শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে এনসিটিই নিয়ম মানা হচ্ছে না। কারণ, খাতায় কলমে ২০২২ সালের জুন মাসে কোর্স সম্পূর্ন হলেও ওই সময়ের মধ্যে প্রার্থীরা শংসাপত্র পাবেন না। ওই বছর নভেম্বরে শংসাপত্র দেওয়া হবে। ফলে শংসাপত্র ছাড়া তাঁদের যোগ্য বলে বিবেচিত করা করা যায় না। অন্য দিকে, ডিভিশন বেঞ্চে মামলা চলাকালীন নতুন বিজ্ঞপ্তি দেয় পর্ষদ। সেখানে সম্পূর্ন প্রশিক্ষণরতদের সুযোগ দেওয়ার কথা বলা হয়।

Advertisement

ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান ওই শিক্ষাবর্ষের ডিএলএড প্রশিক্ষণরতদের একাংশ। গত বছর ২৮ জুলাই বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের বেঞ্চ মেধাতালিকা প্রকাশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করে। সেই থেকে ওই নির্দেশ বহাল থাকে। সোমবার ওই স্থগিতাদেশ তুলে দেয় শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট জানায়, পর্ষদ নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। আদালতে জমা দেওয়া ৯৫৩৩ জনের খসড়া প্যানেল অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগ করতে পারবে পর্ষদ। বাকি ২২২৫ পদ খালি রাখতে হবে। ওই স্থানে মামলাকারী প্রার্থীদের নিয়োগ নিয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেবে আদালত। পাশাপাশি, সর্বোচ্চ আদালত জানায়, আপাতত বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবে ওই শিক্ষাবর্ষের প্রশিক্ষণরতরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement