সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা নীতীশের, মামলা ফিরল হাই কোর্টে। ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তথা কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকের উপর হামলায় ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। গত ২৮ মার্চ এই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, পুনরায় রায় বিবেচনা করতে হবে কলকাতা হাই কোর্টকে।
রাজ্যের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। তিনি আদালতে জানান, রাজ্য পুলিশই এই ঘটনার তদন্ত করার জন্য উপযুক্ত। কিন্তু অপর পক্ষের আইনজীবী আদালতে সওয়াল করে জানান, কনভয়ে হামলার ঘটনায় তৃণমূল সমর্থকরা অভিযুক্ত হলেও পুলিশ বেছে বেছে বিজেপি কর্মীদেরই গ্রেফতার করেছে। দুই পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় জানান, ঘটনার প্রাথমিক রিপোর্টের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাই কোর্ট। কিন্তু পুলিশ কী পদক্ষেপ করেছে, সে দিকে তাকানোর সুযোগ পায়নি উচ্চ আদালত। তাই মামলাটি হাই কোর্টের কাছেই ফিরে যাওয়া উচিত বলে জানান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। পুলিশ এই ঘটনার সাম্প্রতিক রিপোর্ট আদালতের হাতে তুলে দেবে বলেও আশাপ্রকাশ করেছেন তিনি।
গত ২৮ মার্চ হাই কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ রায় দেয়, নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে এই ঘটনার তদন্ত করবে সিবিআই। হাই কোর্ট পর্যবেক্ষণে জানায়, আদালত যাবতীয় অভিযোগ খতিয়ে দেখেছে। নথিপত্র খতিয়ে দেখে আদালত মনে করছে, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের জন্য সিবিআইকে এই মামলার তদন্তভার দেওয়া উচিত। হাই কোর্টের রায়কে স্বাগত জানান নিশীথ।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি কোচবিহারের দিনহাটায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ডেপুটি নিশীথের কনভয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। বিজেপির অভিযোগ, বোমা, গুলি এবং পাথর ছুড়ে হামলা চালানো হয়। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ওই দিন দিনহাটায় গিয়েছিলেন নিশীথ। সেখানেই বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে কথা বলছিলেন তিনি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছিল, বুড়িরহাট এলাকায় তাঁর কনভয় পৌঁছলে তৃণমূল কর্মীরা তাঁকে কালো পতাকা দেখান। যার জেরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিজেপি অভিযোগ করে, নিশীথের কনভয়ে হামলা আসলে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহের ‘চক্রান্ত’। অন্য দিকে, পুরো ঘটনার দায় নিশীথের ঘাড়েই চাপিয়েছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন। দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক দাবি করেন, সমাজবিরোধীদের দিয়ে নিশীথ এলাকা দখল করতে চেয়েছিলেন।
এর পরেই বিজেপি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলে। ঘটনা নিয়ে সরব হন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও। হামলার ঘটনাকে ‘শোচনীয়’ আখ্যা দিয়ে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন রাজ্যপালও। এর পরেই হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল বিজেপি। তাদের তরফে আইনজীবী সূর্যনীল দাস প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বিচারপতি শ্রীবাস্তবের বেঞ্চ সেই মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছিলেন।