(বাঁ দিকে) রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় (ডান দিকে)।
উপাচার্য নিয়োগের সার্চ কমিটি নিয়ে রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীকে বৈঠকে বসতে বলল সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে জানাল, ওই বৈঠকে থাকতে হবে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীকেও। শুক্রবার উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত সার্চ কমিটির সদস্যদের বাকি প্রস্তাবিত নামের তালিকাও জমা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টে। আদালত জানিয়েছে, এই তালিকা থেকেই একটি খসড়া সার্চ কমিটি তৈরি করে আগামী ১২ ডিসেম্বর জমা দিতে হবে দেশের শীর্ষ আদালতের কাছে।
শুক্রবার উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টে। সার্চ কমিটি গঠনের জন্য, রাজ্য, রাজ্যপাল এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের পাশাপাশি আইনজীবী এবং অন্যান্য পক্ষকেও নাম প্রস্তাব করতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্য, রাজ্যপাল এবং কমিশনের তালিকা আগেই জমা পড়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। শুক্রবার বাকিদের প্রস্তাবিত নামের তালিকাও আসে সুপ্রিম কোর্টের হাতে। এর পরেই শীর্ষ আদালত জানায়, ওই তালিকা থেকে প্রত্যেক পক্ষের সমসংখ্যক সদস্য বেছে নিয়ে সার্চ কমিটি গঠনের ব্যাপারে একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় এ ব্যাপারে বৈঠক করবেন। তবে মুখ্যমন্ত্রীর বদলে রাজ্য সরকারের কোনও প্রতিনিধি থাকতে পারেন বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে থাকতে হবে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে। এঁরাই একটি খসড়া সার্চ কমিটি তৈরি করে আগামী ১১ দিনের মধ্যে জমা দিতে হবে সুপ্রিম কোর্টে।
প্রসঙ্গত উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের এর আগের নির্দেশ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। সার্চ কমিটি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে এর আগেও রাজভবন এবং নবান্নকে বৈঠকে বসতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু রাজ্যের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছিলেন, এ ব্যাপারে নবান্ন উদ্যোগী হলেও রাজভবন আলোচনায় আগ্রহ দেখায়নি। একটি চিঠি দিয়ে রাজভবন জানিয়েছিল, সুপ্রিম কোর্ট আলোচনায় বসার ব্যাপারে কোনও লিখিত নির্দেশ দেয়নি, তাই আলোচনা জরুরি নয়। যদিও রাজভবনের আইনজীবী পাল্টা আদালতে বলেন, চিঠি দেওয়া হয়েছিল, সে ব্যাপারে তিনি অবগত হলেও তার বয়ানের বিষয়ে কিছু জানেন না। এর পরেই উপাচার্য নিয়োগে গড়িমসি নিয়ে রাজ্যপালের সমালোচনা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। বলেছিল, চিঠির বয়ান কী তা জানাতে হবে। শুক্রবার এই মামলারই পরবর্তী শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টে। সেখানেই সার্চ কমিটি নিয়ে বৈঠক করতে বলে সুপ্রিম কোর্ট।
এর আগে গত ৬ অক্টোবর অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। দেশের শীর্ষ আদালত বলে দিয়েছিল, রাজ্যপাল আর অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য নিয়োগ করতে পারবেন না। এমনকি, যাঁদের তিনি নিয়োগ করেছেন, তাঁরাও উপাচার্য পদের সুযোগ-সুবিধা পাবেন না। নিতে পারবেন না গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। একই সঙ্গে রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, ‘‘আর কত দিন রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অস্থায়ী উপাচার্যেরা থাকবেন?’’