সিএনজি নির্ভর গাড়ির সংখ্যা বাড়লেও, কোনও ভাবেই বাড়ছে না সিএনজি জোগানের পরিমাণ। —ফাইল চিত্র।
পরিবেশবান্ধব যানবাহনের সংখ্যা বাড়াতে গত কয়েক বছর ধরেই উৎসাহ দিতে শুরু করেছে পরিবহণ দফতর। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে বেসরকারি বাস তো বটেই অনেকই ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য পরিবেশবান্ধব জ্বালানি নির্ভর গাড়ি কিনেছেন। কম্প্রেসিভ ন্যাচারাল গ্যাস (সিএনজি) নির্ভর গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে কলকাতা শহর ও শহরতলির এলাকা জুড়ে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, সিএনজি নির্ভর গাড়ির সংখ্যা বাড়লেও, কোনও ভাবেই বাড়ছে না সিএনজি জোগানের পরিমাণ।
গত দু’বছর সিএনজি নির্ভর গাড়ির সংখ্যা বাড়লেও, হাতেগোনা কয়েকটি পেট্রল পাম্পেই কেবলমাত্র সিএনজি পাওয়া যাচ্ছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পাম্পে দীর্ঘ ক্ষণ লাইন দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না সিএনজি। আবার অনেক ক্ষেত্রেই পাম্পে লাইন দিয়েও খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে গাড়ির মালিকদের। এমন পরিস্থিতি প্রসঙ্গে পরিবহণ দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, শহর ও শহরতলিতে চলাচল করা সিএনজি নির্ভর গাড়িগুলির জন্য দৈনিক ২০ হাজার কেজি মতো সিএনজি প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমানে জোগান দেওয়া যাচ্ছে কেবলমাত্র ছ’হাজার কেজি। এমতাবস্থায় পরিবহণ সচিব সৌমিত্র মোহন বেঙ্গল গ্যাস কর্তৃপক্ষকে সিএনজির জোগান বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন। পরিবহণ দফতরের সঙ্গে বেঙ্গল গ্যাস কর্তৃপক্ষের সিএনজি জোগান দেওয়ার চুক্তি হওয়ার কারণেই এমন নির্দেশ গিয়েছে তাদের কাছে।
তবে পরিবহণ দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, পাইপলাইন দিয়ে সিএনজি দুর্গাপুর থেকে কল্যাণীতে আনার কাজ প্রায় শেষের পথে। বর্ধমান জেলা থেকে হুগলিতে প্রবেশের সময় এক কিলোমিটার পাইপ লাগানোর কাজ জমি জটের কারণে আটকে রয়েছে। কল্যাণী থেকে বর্ধমান জেলার সীমান্ত পর্যন্ত পাইপলাইনের কাজ হয়ে গিয়েছে। আবার দুর্গাপুর থেকে বর্ধমান হুগলি সীমান্ত পর্যন্তও পাইপলাইনের কাজ হয়ে গিয়েছে। জমিজট খুলে গেলেই দ্রুত এক কিলোমিটার পাইপলাইনের কাজ সম্পন্ন হবে। তখন সিএনজি জোগান নিয়ে সমস্যা থাকবে না। কিন্তু যত দিন না এই জট খুলছে দুর্গাপুর থেকে ট্যাঙ্কারে করে কলকাতার বিভিন্ন পেট্রল পাম্পে এনেই সিএনজি সরবরাহ করতে হবে। এই পথে যাতে সিএনজির জোগান পর্যাপ্ত রাখা যায়, সেই বিষয়েই পরিবহণ সচিব নজর দিতে বলেছেন বেঙ্গল গ্যাস কর্তৃপক্ষকে।
সিএনজি জোগানের সমস্যা প্রসঙ্গে সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসেসের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, ‘‘আমরা রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনে সিএনজি গাড়ি চালাতে প্রস্তুত। কিন্তু সিএনজি জোগানের কাঠামো এখনও পুরোপুরি তৈরি হয়নি। তাই আমরা বলব, দ্রুত পরিকাঠামো গড়ে এই বিষয়ে পদক্ষেপ করুক পরিবহণ দফতর। আমাদের সহযোগিতা সব সময় রয়েছে।’’