শুধু যাওয়া আসা।
দীর্ঘদিন ছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লকে। পরে এক সময়ে বিজেপিতে এসেছিলেন। সেখান থেকে আবার তৃণমূলেও গিয়েছিলেন। মঙ্গলবার ফের ফিরলেন বিজেপিতে। মেদিনীপুরের সুকুমার ভুঁইয়া। আট বছরে তিনবার দল বদলালেন তিনি।
কে এই সুকুমার?
এক সময় ব্যাঙ্ক দুর্নীতিতে অভিযুক্ত সুকুমারকে গ্রেফতার করেছিল সিআইডি। এখন জামিনে মুক্ত। দলে বেনোজল আটকাতে ছাঁকনির ব্যবস্থা করেছে বিজেপি। সূত্রের খবর, দলের সর্বভারতীয় সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নির্দেশে রাজ্য দলে তৈরি হচ্ছে ‘সিলেকশন কমিটি’। তা হলে সুকুমার কী ভাবে এ দিন বিজেপির জেলা কার্যালয়ে গিয়ে জেলা সভাপতি শমিত দাশের হাত থেকে দলীয় পতাকা নিলেন? শমিতের ব্যাখ্যা, ‘‘সুকুমারদার আবেদন রাজ্যের কাছে পাঠানো হয়েছিল। ওঁর (সুকুমার) নামে মামলা রয়েছে বলেই আমরা সরাসরি নিইনি। রাজ্যের সঙ্গে কথা বলেছি। রাজ্য সবুজ সঙ্কেত দেওয়ার পরেই আমরা নিলাম।’’ বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব। যদি সত্যি গোলমাল থাকে, তাহলে কোনও কর্মসূচিতে তাঁকে রাখা হবে না।’’
ঘর ওয়াপসির পরে সুকুমার অবশ্য উৎসাহিত। বলছেন, ‘‘বিজেপিই শান্তির পক্ষে, উন্নয়নের পক্ষে। তাই বিজেপিতে এলাম।’’ তা হলে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে গিয়েছিলেন কেন? এ বার সুকুমারের ব্যাখ্যা, ‘‘মনে হয়েছিল ওরা (তৃণমূল) শান্তি চায়। পরে ভুল ভেঙেছে।’’
শুধু সুকুমার নন। তৃণমূল ছেড়ে এদিন ২৭০ জন বিজেপিতে যোগদান করেছেন বলে দাবি শমিতের। তিনি জানান, যাঁরা যোগ দিয়েছেন, তারা মেদিনীপুর গ্রামীণ, নারায়ণগড়ের বিভিন্ন অঞ্চলের বাসিন্দা। তৃণমূলের বেনোজলেরাই না কি বিজেপিতে আসছেন? শমিত বলেন, ‘‘বেনোজল কথাটায় আমার আপত্তি রয়েছে। তৃণমূলে থেকে যাদের দমবন্ধ হয়ে আসছিল, যারা সমাজের সেবা করতে চান, সেই রকম বেশ কিছু কার্যকর্তা বিজেপিতে যোগদান করেছেন। দস্যু রত্নাকর থেকে বাল্মিকী হয়েছেন। মানুষ সব সময়ে একই রকম থাকে না।’’
সুকুমারের বিজেপিতে যোগদানের পরে যদিও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘ব্যাঙ্ক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পরে আমরা ওকে দল থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলাম। আমরা যাদের তাড়িয়ে দিই, তাদেরই তো বিজেপি নেয়। এ আর নতুন কী!’’