সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। —ফাইল চিত্র।
কালো টাকা সাদা করতে মেয়ে এবং জামাইকেও ব্যবহার করেছিলেন নিয়োগকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। তদন্তকারী সংস্থা ইডি তাঁর বিরুদ্ধে কলকাতার নগর দায়রা আদালতে যে ১২৬ পাতার মূল চার্জশিট পেশ করেছে, তাতে উল্লেখ করা হয়েছে জামাইয়ের নামেও সম্পত্তি কিনেছিলেন সুজয়কৃষ্ণ। ইডি সূত্রে খবর, নিয়োগকাণ্ডে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে তোলা অবৈধ টাকা সাদা করতে নামে-বেনামে একাধিক সম্পত্তি কিনেছিলেন সুজয়কৃষ্ণ।
১২৬ পাতার চার্জশিটের ৮৩ নম্বর পাতায় বলা হয়েছে, সুজয়কৃষ্ণের নির্দেশে প্রায় আড়াই কোটি টাকা দিয়ে কলকাতার ভবানীপুরে একটি ফ্ল্যাট কিনেছিলেন দেবরূপ চট্টোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তি। এই দেবরূপ হলেন সুজয়কৃষ্ণের মেয়ে পারমিতা চট্টোপাধ্যায়ের স্বামী। চার্জশিটে বলা হয়েছে, ফ্ল্যাটটি কিনতে জামাইকে দিবাকর খেমকা নামের এক ব্যক্তি এবং তাঁর অধীনস্থ সংস্থার কাছ থেকে প্রায় ২ কোটি ৬০ লক্ষ টাকার ঋণ পাইয়ে দিয়েছিলেন সুজয়কৃষ্ণ। ইডির দাবি, ‘ওয়েলথ উইজার্ড’ নামের একটি সংস্থার কাছ থেকে আরও ৪৫ লক্ষ টাকা ঋণের বন্দোবস্ত করে দিয়েছিলেন ‘কালীঘাটের কাকু’। প্রসঙ্গত, ইডির দাবি, এই সংস্থাটি সুজয়কৃষ্ণের অধীনস্থ। চার্জশিটেও সংস্থাটিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
যদিও অর্থ নয়ছয় প্রতিরোধ আইনের ৫০ নম্বর ধারায় ঋণদাতা দিবাকরের যে বয়ান নথিভুক্ত করেন তদন্তকারীরা, তাতে তিনি বলেন, সুজয়কৃষ্ণ কিংবা তাঁর জামাই দেবরূপকে কোনও ঋণ দেওয়া হয়নি। ইডির তরফে দাবি করা হয়েছে, দেবরূপ একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে নতুন ফ্ল্যাটের টাকা মিটিয়েছিলেন। অন্য দিকে, সুজয়কৃষ্ণ একটি সরকারি ব্যাঙ্কে ওই সংস্থা থেকে ঋণবাবদ নেওয়া টাকা জমা করেছিলেন। চার্জশিটে বলা হয়েছে, ফ্ল্যাট কিনতে তিনি যে সুজয়কৃষ্ণের সহায়তা পেয়েছেন, তা স্বীকার করে নিয়েছেন জামাই দেবরূপ।
ইডির চার্জশিটে এ-ও বলা হয়েছে যে, নিয়োগকাণ্ডে আর এক অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষ কিংবা তাঁর মতো আরও বহু এজেন্টদের কাছ থেকে তোলা টাকা সাদা করতে নামে বেনামে এই ধরনের সম্পত্তি কিনেছিলেন সুজয়কৃষ্ণ।