ওম বিড়লা, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, শিশির অধিকারী এবং সুনীল মণ্ডল। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আগেই চিঠি দিয়েছিলেন। এ বার শিশির অধিকারী এবং সুনীল মণ্ডলের সাংসদ পদ খারিজের প্রশ্নে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে ফোন করলেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার সকালে সুদীপ ফোন করেন স্পিকারকে। পরে সুদীপ বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে স্পিকারের কথা হয়েছে। আমিওঁকে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চেয়েছি। উনি জানিয়েছেন, অনেক দিন তিনি সংসদে যেতে পারেননি। বৃহস্পতিবার উনি সংসদ ভবনে যাবেন। সেখানে গিয়ে নথিপত্র খতিয়ে দেখবেন।’’
সুদীপ আরও বলেন, ‘‘আমার ধারনা, স্পিকার অন্তত ওই দুই সাংসদকে ডেকে জানতে চাইবেন, তাঁরা কোন দলে রয়েছেন। তৃণমূল না বিজেপি? এটুকু তো উনি করতেই পারেন। করা উচিত।’’ সুদীপের বক্তব্য, দু-চার দিন পরে তিনি স্পিকারের কাছে আবার বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইবেন। তৃণমূলের লোকসভার দলনেতার কথায়, ‘‘আমি দু-চার দিন পরে আবার ওঁর সঙ্গে যোগাযোগ করব।’’
তৃণমূলের প্রতীকে নির্বাচিত ওই দুই সাংসদের লোকসভার সদস্যপদ খারিজের দাবি জানিয়ে স্পিকারের কাছে আগেই দরবার করেছেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ। গত ১৯ ডিসেম্বর মেদিনীপুরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপস্থিতিতে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল। তার পরে বিধানসভা ভোটের প্রচারে ২১ মার্চ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরায় এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেই সভায় হাজির হয়ে তৃণমূল তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে বক্তৃতা করেছিলেন কাঁথির তৃণমূল সাংসদ শিশির। দলত্যাগ বিরোধী আইনে সুনীলের সাসংদ পদ খারিজের দাবিতে গত ৪ জানুয়ারি স্পিকারকে প্রথম চিঠি দিয়েছিলেন সুদীপ। তার পর ২ মে ভোটপর্ব মিটে যেতে গত ১২ মে আবার সুনীলের সাংসদ পদ খারিজের দাবিতে লোকসভার স্পিকারকে চিঠি দেন সুদীপ। একই ভাবে দলত্যাগ-বিরোধী আইনেই শিশিরেরও সাংসদপদ খারিজের দাবিতে ১৭ স্পিকারকে চিঠি দেন সুদীপ। কিন্তু ওই দুই বিষয়েই লোকসভার সচিবালয়ের তরফে কোনও উচ্চবাচ্য এখনও না হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকালে স্পিকারকে ফোন করে শিশির-সুনীলকে অপসারণের দাবি জানান সুদীপ।
তৃণমূল সংসদীয় দলের এমন পদক্ষেপ নিয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন বর্ধমান পূর্বের তৃণমূল-ত্যাগী সাংসদ সুনীল। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি এখনও এ বিষয়ে কিছুই জানি না। খোঁজখবর নিয়েই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘আমি যথাসময়ে আমার কাজ করব। এখ তো করোনা চলছে। আমি নিজেও একটু অসুস্থ। তা-ই এখনই এ নিয়ে কিছু বলতে পারছি না।’’ শিশিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁকে ফোন করালে জানা হয়েছে, ‘‘উনি বিশ্রাম করছেন।’’