দুই বোন। মাঝে সুব্রত মুখোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র
হাসপাতালে যাওয়ার দিন কয়েক আগে নারকেল নাড়ু খেতে চেয়েছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। সামনে ভাইফোঁটা। সুব্রতর বোন বুলবুল চট্টোপাধ্যায় কথা দিয়েছিলেন, ভাইফোঁটার দিন নাড়ু খাওয়াবেন। এক কৌটো নাড়ু বানিয়েও রেখেছিলেন। কিন্তু ফোঁটা নেওয়ার আগেই না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন দাদা সুব্রত।
শুক্রবার রাতে হাসপাতাল থেকে ফেরার কথা ছিল সুব্রতর। ভাইফোঁটার ঠিক আগের দিন। তিন বোন ঠিক করেছিলেন, দাদা বাড়ি ফিরলে দেখা করতে যাবেন। সুব্রতর বাড়ির কাছাকাছি থাকতেন তাঁরা। এর মধ্যে একজন তনিমা চট্টোপাধ্যায় সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর বাড়িতেই দাদার জন্মদিন থেকে ভাইফোঁটা পালন করা হত। হত ঢালাও খাওয়া দাওয়াও। সাবেকি খাবার পছন্দ করতেন সুব্রত। পছন্দ করতেন পোস্তর বড়া, মাছের টক, পাঠার মাংস। এ বার অবশ্য খাবারের সেই বিপুল আয়োজন ছিল না। যেহেতু সুব্রত অসুস্থ এবং হয়তো তাঁর খাওয়াদাওয়ার উপর চিকিৎসকের নিষেধ থাকবে, তাই এ বছর বড় খাওয়াদাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করেছিলেন বোনেরা। তবে যেহেতু সুব্রত খেতে ভালবাসতেন তা-ই নারকেল নাড়ুর মতো ইচ্ছেপূরণের ব্যবস্থা রেখেছিলেন বোনেরা। তবে সেই ইচ্ছে অপূর্ণই রয়ে গেল।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ স্বাস্থ্যের অবনতি হয় সুব্রতের। স্টেন্ট থ্রম্বোসিসে আক্রান্ত হন তিনি। আইসিসিইউ-তেও স্থানান্তরিত করা হয়েছিল তাঁকে। খবর পেয়ে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবারই রাত ৯টা ২২ মিনিট নাগাদ প্রয়াত হন তিনি। বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। ২৪ অক্টোবর, রবিবার স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতে এসএসকেএম হাসপাতালে যাওয়ার পর সুব্রতকে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। শ্বাসকষ্ট বাড়ায় উডবার্ন ওয়ার্ডের আইসিসিইউ-তে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু অবস্থার অবনতি হতে থাকে। সেখানেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ।